‘দেখেন ভাই, বোতলে লেখা ৮৫২; কিনলাম ৮৮০ টাকায়। এই পাঁচ লিটারে যে আমার ২৮ টাকা বেশি দিতে হইল, তাইলে দ্যাশে পরিবর্তনটা হইছে কী?’ গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে বেশি দরে তেল কেনার পর বারুদকণ্ঠে কথাগুলো বলেছিলেন শাহরিয়ার আলম। আঙুলের ইশারায় তাঁর দেখিয়ে দেওয়া সেই দোকানে দাম যাচাইয়ে যায় সমকাল। দাম বেশি নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট দোকানি বলেন, ‘বোতলে লেখা দরেই ডিলার থেকে তেল কিনতে হইছে। সাড়ে আটশ টাকা পুঁজি খাটায়া ২৮ টাকা লাভ করতে না পারলে ব্যবসা করব কেমনে?’
ভোজ্যতেল নিয়ে এমন ক্ষোভের দহন এখন সবখানেই। ক্রেতারা যেমন ফুঁসছেন, ছোট ব্যবসায়ীরাও ত্যক্ত-বিরক্ত। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী, হাতিরপুলসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলজাত সয়াবিন তেল পুরোপুরি উধাও। কয়েকটি দোকানে মিললেও গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। এ কারণে খোলা তেলের দামও আকাশ ছুঁয়েছে। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল কেনাবেচা হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮২ টাকায়। অথচ সরকারের নির্ধারিত দর ১৫৭ টাকা। সে হিসাবে প্রতি লিটারে ভোক্তাকে বাড়তি গুনতে হচ্ছে ২৩ থেকে ২৫ টাকা।
আমদানি সংকট দেখিয়ে কোম্পানিগুলো তেল সরবরাহ তলানিতে ঠেকিয়েছে। দৈনিক সাড়ে পাঁচ হাজার টন চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে আড়াই হাজার টন। এতে বাজারে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি চলছে তাও দুই-তিন মাস। খোদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরই দুটি সংস্থার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কৃত্রিম সংকটের ইঙ্গিত। তবু তাদের যেন কিছুই করার নেই। শুধু বাজার পরিদর্শনে গিয়ে ছোট ব্যবসায়ীকে জরিমানা করে দায় সারছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, তদারকি আরও জোরদার করা হচ্ছে। অচিরেই সংকট কেটে যাবে।বিস্তারিত