অনলাইন ডেস্ক
মাগুরায় আট বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চার আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
নিরাপত্তাজনিত শঙ্কায় পুলিশ তাদের দিনব্যাপী আদালতে হাজির করতে পারেনি। পরে মধ্যরাতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার রাত ১২টার পর মাগুরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মতিন এ শুনানি গ্রহণ করেন।
শুনানিতে মামলার মূল অভিযুক্ত, ভুক্তভোগী শিশুর বোনের শ্বশুরের সাত দিনের রিমান্ড এবং শিশুটির বোনের স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
মধ্যরাতে আদালত শুনানি কেন?
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, রিমান্ড আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল। তবে নিরাপত্তার কারণে আসামিদের দিনের বেলায় আদালতে আনা সম্ভব হয়নি। কারণ সকাল থেকেই আন্দোলনকারীরা আদালতের ফটক ঘিরে রাখেন এবং আসামিদের তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান। তাই রাতে শুনানি করা হয়।
শুনানির সময় আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিলে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন।
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে জানান, ভুক্তভোগী শিশু এখনো অচেতন থাকায় তার জবানবন্দি নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শিশুটির অবস্থা ও চিকিৎসা
গত ৬ মার্চ মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। প্রথমে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৭ মার্চ রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। বর্তমানে শিশুটি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মামলা ও বিক্ষোভ
শিশুটির মা ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এতে শিশুটির বড় বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয় এবং পরে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার প্রতিবাদে ৯ মার্চ সকাল থেকে মাগুরা শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা সকাল ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল ফটক অবরোধ করেন। এরপর বিকেল ৫টা পর্যন্ত তারা ভায়না মোড় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন এবং সন্ধ্যায় শহরে মশাল মিছিল বের করেন।
নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি এবং জনরোষের কারণে আসামিদের দিনের বেলায় আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।