পয়লা বৈশাখ প্রকৃত গণতন্ত্র চায়

পয়লা বৈশাখ প্রকৃত গণতন্ত্র চায়

আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজের কথা বলি। গণতন্ত্রের একেবারে প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি, কিন্তু সেটা যে অর্জন করতে পেরেছি তা বলতে পারব না। সাম্প্রদায়িকতা কমেছে, কিন্তু রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বরঞ্চ বৃদ্ধি পেয়েছে, কমবার লক্ষণ নেই। পয়লা বৈশাখ সর্বপ্রথম যে-কথাটা বলে, সে-কথা ধর্মনিরপেক্ষতার। ব্যক্তির জীবনে ধর্ম আছে, থাকুক, কিন্তু সমষ্টিগত পরিচয়টা ধর্মের ভিত্তিতে হবে না, হবে মাতৃভাষার ভিত্তিতে। কথা তো এটাই।

যে-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা যুদ্ধ করলাম সে-রাষ্ট্র যে ধর্মনিরপেক্ষ হবে এটা ছিল স্বতঃসিদ্ধ। হানাদার পাকিস্তানিরা ঘোষণা দিয়েছিল যে, তারা একটি ধর্মযুদ্ধে নেমেছে; আমরা বলেছি, তারা নিয়োজিত হয়েছিল বাঙালি নিধনে। আমাদের ওই বক্তব্য কোনো তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠেনি, বাস্তব অভিজ্ঞতার ওপরই প্রতিষ্ঠিত ছিল। বাঙালির ওই প্রতিরোধ শুরু বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে, পরিণতি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। মনীষী বাঙালি লেখকদের যে-বক্তব্য একুশে ফেব্রুয়ারি তাকেই আরও সামনে নিয়ে গেছে, ধর্মনিরপেক্ষতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে রাষ্ট্রে ও সমাজে। বড় লেখকরা বাঙালির হৃদয়ে যে সহমর্মিতা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির আন্দোলন সেই সহমর্মিতাকেই আরও প্রসারিত করতে চেয়েছে, শ্রেণির বন্ধন ও বিভেদ ভেঙে দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধ ছিল ওই আন্দোলনেরই যৌক্তিক পরিণতি।বিস্তারিত

মতামত শীর্ষ সংবাদ