আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইউক্রেনের সঙ্গে ‘সরাসরি আলোচনার’ প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। তবে আলোচনার আগে শর্তবিহীন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন। দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তির জন্য এ আলোচনা আয়োজন করতে যাচ্ছে তুরস্ক।
এ অবস্থায় আশা জেগেছে তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটার।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে চাই। আগামী ১৫ মে ইস্তাম্বুলে এটি হতে পারে। তবে কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই এটি হওয়া উচিত।’
পুতিন আরও বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে গুরুতর আলোচনার জন্য প্রস্তুত। সংঘাতের মূল কারণগুলোর সমাধান করা এবং একটি দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় পৌঁছানোই আমাদের লক্ষ্য।’
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনার আগে শর্তবিহীন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তিনি বলেছেন, ‘রাশিয়ার পক্ষ থেকে যুদ্ধ সমাপ্ত করার আগ্রহ প্রকাশের বিষয়টি ইতিবাচক। তবে যে কোনো লড়াই অবসানের পথে প্রাথমিক ধাপ হলো যুদ্ধবিরতি।’
ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য কিয়েভ ইন্ডিপেনডেন্ট’ জেলেনস্কির বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ও প্রধান ইউরোপীয় শক্তিদের কাছ থেকে ৩০ দিনের শর্তহীন যুদ্ধবিরতি কার্যকরের বিষয়ে সমর্থন পেয়েছেন জেলেনস্কি। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোমবার থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এদিকে, রবিবার সকালে পুতিন বলেন, ‘আগামী ১৫ তারিখ ইস্তানবুলে ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছে রাশিয়া।’
এর আগে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর চাপ তৈরি করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে দেওয়া এক পোস্টে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে জেলেনস্কির প্রতি এই চাপ তৈরি করেন তিনি।
পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি চান না। এর পরিবর্তে তিনি বৃহস্পতিবার তুরস্কে সরাসরি সাক্ষাতে রক্তবন্যার অবসানে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। রুশ প্রেসিডেন্টের এই প্রস্তাবে ইউক্রেনের তাৎক্ষণিকভাবে রাজি হওয়া উচিত।’
এদিকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তির জন্য আলোচনা আয়োজনে তুরস্ক সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
রবিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ টেলিফোন আলাপে তিনি এ কথা জানান।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টায় একটি ঐতিহাসিক মোড় সামনে এসেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে এবং তুরস্ক সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। যার মধ্যে রয়েছে আলোচনার আয়োজন করাও গুরুত্বপূর্ণ-যাতে একটি যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।’