আন্তর্জাতিক অনলাইন ডেস্ক
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের মাঝেই বড় পদক্ষেপ নিল তেহরান। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে একটি আইন অনুমোদন করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। এই পদক্ষেপে কার্যত বিপাকে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা।
নতুন আইনের আওতায় আইএইএ’র পরিদর্শকরা এখন আর ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে স্বেচ্ছায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এজন্য প্রয়োজন হবে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পূর্বানুমতি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাতে জানা গেছে, এই সিদ্ধান্ত ইরানের সার্বভৌম নিরাপত্তা রক্ষার অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানান, আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি সম্প্রতি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরানি পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো পরিদর্শনের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু সেটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যিনি ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার নিন্দা পর্যন্ত জানাননি, তিনি চাইলেই আর ইরানে ঢুকতে পারবেন না।’
আরাঘচি গ্রোসি’র উদ্যোগকে ‘অর্থহীন এবং কূটকৌশলপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেন। এদিকে, ইরানের কায়হান পত্রিকা গ্রোসিকে ইসরায়েলি গুপ্তচর আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে। যদিও ইরান সরকার বলেছে, আইএইএ বা এর প্রধানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের হুমকি দেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি ইসরাইলের হঠাৎ হামলায় ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১২ দিনের সেই যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ বিজ্ঞানী ও সামরিক কর্মকর্তা। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ইসরাইলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
প্রসঙ্গত, ২২ জুন ইসরাইলের মিত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফোর্দো, ইসপাহান ও নাতাঞ্জের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। বহু উত্তেজনার পর ২৪ জুন কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের এই নতুন আইন শুধু দেশটির পরমাণু কর্মসূচি নয়, বরং গোটা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতেই নতুন সমীকরণ তৈরি করবে।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=elbbqOIaaeg