সাইফুজ্জামান চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরীর পুত্র। প্রয়াত আখতারুজ্জামান ছিলেন চট্টগ্রামের আনোয়ারা অঞ্চলের অন্যতম চোরাচালান সিন্ডিকেটের প্রধান। তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি, অনিয়ম এবং সন্ত্রাসের অভিযোগ ছিল। সেই পথেই উত্থান ঘটে তার পুত্র সাইফুজ্জামান চৌধুরী ওরফে জাভেদের। তিনি ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে বিনা ভোটে এমপি হওয়ার পর তাকে ভূমি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে তিনি পদোন্নতি পেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হন। পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি মন্ত্রণালয়ের স্বচ্ছতার জয়গান গেয়েছিলেন। ‘ভূমি মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না’, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা’ ইত্যাদি নানা স্লোগানে মন্ত্রণালয় ভরিয়ে দিয়েছিলেন, নিজের একটা ক্লিন ইমেজ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয়ে তিনি ছিলেন স্বচ্ছতার প্রতীক। ভূমি মন্ত্রণালয়কে তিনি দুর্নীতিমুক্ত করেছেন বলেও দাবি করতেন। কিন্তু বাইরে ফিটফাট এই ভদ্র মানুষটির আড়ালে ছিল একজন ‘মহাদুর্নীতিবাজ’ অর্থ পাচারকারী। মজার ব্যাপার হলো, অন্যরা যেমন দুর্নীতির টাকা দিয়ে দেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেনি। বরং তিনি দুর্নীতির টাকা পুরোটাই বিদেশে পাচার করেছেন। বিদেশে তার এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার হদিস পাওয়া গেছে। এসব অর্থ তিনি বিনিয়োগ করেছেন যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, কানাডা, ব্রুনাই, ম্যাকাওসহ বিভিন্ন দেশে। প্রতিটি দেশেই আবাসন খাতে তার বিপুল বিনিয়োগের খবর এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়। প্রশ্ন উঠেছে কীভাবে সাইফুজ্জামান জাভেদ এ অর্থ পেলেন? বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তার এই অর্থের প্রধান উৎস হলো ব্যাংক লুট এবং চোরাচালান। সাইফুজ্জামান চৌধুরী পৈতৃকসূত্রে ইউসিবি ব্যাংক পেয়েছিলেন। যদিও বিএনপির আমলে এ ব্যাংক হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হওয়ার পর আবারও ইউসিবি ব্যাংক দখল করেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এটিকে মূলত পারিবারিক সম্পত্তিতে পরিণত করেন। ইউসিবির সাম্প্রতিক সময়ের অডিটে দেখা গেছে, এখান থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বেনামে পাচার করেছেন।বিস্তারিত