ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জনসেবামূলক কার্যক্রম জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেছেন, “প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সততা, দায়িত্ববোধ এবং প্রকৃত দেশপ্রেম থাকতে হবে। এ গুণাবলি ছাড়া উন্নয়ন টেকসই হবে না।”
মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত ‘দপ্তর প্রধানদের সমন্বয় সভা’-তে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ভূমি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিনিয়র সচিব বলেন, “ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কৃষি জমির সুরক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করাই বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার।”
তিনি উল্লেখ করেন, মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তার মাধ্যমে নাগরিকদের সেবা পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ ও জনবান্ধব করা হচ্ছে।
সভায় জানানো হয়, মাঠপর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের গতিশীলতা ও কার্যকর পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করতে মোটরসাইকেল সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ভূমি ভবনে একটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি স্থাপনের প্রস্তাবও দেন সিনিয়র সচিব।
তিনি বলেন, “প্রযুক্তি, শিক্ষা ও নৈতিকতার সমন্বয় ছাড়া কার্যকর ও দক্ষ প্রশাসন গঠন সম্ভব নয়। দেশের স্বার্থকে ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া উচিত—এটাই প্রকৃত দেশপ্রেমের প্রকাশ।”
সভায় ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান একেএম সালাহউদ্দিন নাগরী, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মাহমুদ হাসান এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
তারা ভূমি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে চলমান কর্মসূচির অগ্রগতি, মাঠপর্যায়ের চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। কর্মকর্তারা জানান, ই-নামজারি, অনলাইন খতিয়ান এবং ডিজিটাল ভূমি মানচিত্র প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভূমি মন্ত্রণালয় বর্তমানে ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করেছে। এর আওতায় দেশব্যাপী ভূমি রেকর্ড ও সেবা ব্যবস্থায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে। এতে দুর্নীতি কমে আসছে এবং জনসাধারণের হয়রানি হ্রাস পাচ্ছে বলে দাবি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের।
সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রতীয়মান হয়, প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে নৈতিকতা, দায়বদ্ধতা এবং জনসেবার মান উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। দেশের উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
ভূমি ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিনির্ভর ও জনবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে কার্যকরতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ভবিষ্যতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অর্জনে ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।