নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনে রদবদল হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূ

নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনে রদবদল হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূ

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচনের আগে প্রশাসনের সকল ধরনের রদবদল সরাসরি তার তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, “ভোটে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারবে, এমন যোদ্ধাদেরই বেছে নেওয়া হবে।”

জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে একাধিক ফিট লিস্ট পর্যালোচনা করে যোগ্য এবং নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোতে পদায়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিএনপি নেতারা বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানান, পূর্ববর্তী সরকারে (আওয়ামী লীগ শাসনামলে) নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা ও বিতর্কিত হিসেবে পরিচিত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের এবারের নির্বাচনে কোনো দায়িত্ব না দেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। এ ছাড়া প্রশাসনে যেকোনো রদবদলে নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানান তাঁরা।

প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেন, নির্বাচনকে ঘিরে যেকোনো ধরনের পক্ষপাতমূলক আচরণ এড়াতে প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, “ভোট শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে।”

উল্লেখযোগ্য যে, নির্বাচনী সময়ে প্রশাসনিক পদে রদবদল এবং দায়িত্ব বণ্টন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলোতে প্রশাসনিক পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে সমালোচনা করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে বিরোধী পক্ষ। এবারের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে নিরপেক্ষতা রক্ষার লক্ষ্যে প্রশাসনিক কার্যক্রমের উপর নিবিড় দৃষ্টি থাকবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

বিএনপি নেতাদের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

এই বৈঠকটি ছিল রাজনৈতিক সংলাপের ধারাবাহিক অংশ, যেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের মতামত ও প্রস্তাবনা তুলে ধরছে। লক্ষ্য, একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রশাসনে রদবদলের এই উদ্যোগ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হতে পারে, তবে চূড়ান্ত ফলাফল নির্ভর করবে বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও নিরপেক্ষতার উপর। ভবিষ্যতের পদক্ষেপগুলোতে এই প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন দেখা গেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপর জনআস্থা আরও সুদৃঢ় হবে বলে মত দেন তাঁরা।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ