অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আজ (বুধবার) বিকেলে বৈঠক করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জাতীয় সংলাপের প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিকেল ৫টায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেবেন জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের সংবাদমাধ্যমকে জানান, প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে প্রতিনিধি দলটি বৈঠকে অংশ নিচ্ছে। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে আজকের বৈঠকের সময়, এজেন্ডা ও উপস্থিত সদস্যদের ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, চলমান রাজনৈতিক সংলাপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি সংলাপ পর্বের একটি ধারাবাহিক অংশ, যেখানে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরপর বৈঠক করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এর আগে, গতকাল (মঙ্গলবার) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর একটি প্রতিনিধি দল। দুই দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার এ বৈঠককে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে পরিচালিত সংলাপ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজকের বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের উপায়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, জুলাইয়ে ঘোষিত জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা–সহ নীতিগত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনায় আসতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর অংশগ্রহণকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ও সাম্প্রতিক পরিস্থিতির আলোকে।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক সংকট নিরসনে চলতি বছর জুলাই মাসে অন্তর্বর্তী সরকার একটি জাতীয় সনদ ঘোষণা করে, যার আওতায় একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে জাতীয় সংলাপ শুরু করা হয়। সংলাপে ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং পেশাজীবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেছে সরকার।
আজকের বৈঠক থেকে কোনো ধরনের লিখিত ঘোষণা বা যৌথ বিবৃতি আসবে কি না, সে বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে বৈঠক-পরবর্তী ব্রিফিংয়ে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে আলোচনার সারাংশ তুলে ধরা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সমঝোতার ভিত্তি গড়ে তোলা সম্ভব হলে তা আগামী নির্বাচন ও দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত।