ইথিওপিয়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত, আহত ২৭-২৯ জন

ইথিওপিয়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত, আহত ২৭-২৯ জন

পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ায় গত সোমবার রাতে একটি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ২৭ থেকে ২৯ জন। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ইথিওপিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শিনিলে শহরের কাছে, যেখানে চলন্ত একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে থেমে থাকা অপর একটি ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

স্থানীয় টিভি চ্যানেল ডায়র টিভি জানায়, দুর্ঘটনার সময় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেন। দুর্ভাগ্যবশত, ওই সময়ে বেশ কয়েকজন যাত্রী প্রাণ হারান এবং আরও অনেকেই আহত হন। দুর্ঘটনার পর ট্রেনের কয়েকটি বগি উল্টে পড়েছে, কিছু বগি সম্পূর্ণরূপে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে।

জেলাপ্রশাসক জিবরিল ওমর বিবিসিকে জানান, এই দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল ট্রেনটির পুরনো অবস্থা এবং অতিরিক্ত যাত্রী ও পণ্য বহন। তিনি বলেন, “ট্রেনটি অনেক পুরোনো, এবং ভারী বোঝা বহন করার সক্ষমতা ছিল না। অতিরিক্ত বোঝা বহন করাই ছিল দুর্ঘটনার বড় কারণ।”

স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় আহতদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি, তবে আনুমানিক ২৭ থেকে ২৯ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

সোমালি আঞ্চলিক সরকারের মুখপাত্র মোহাম্মদ আদম জানিয়েছেন, নিহত ও আহতদের সবাইকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ইথিওপিয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনা সাধারণত বিরল, তবে এই দুর্ঘটনা দেশের পুরোনো ট্রেন এবং অবকাঠামোর দুর্বলতার সমস্যা তুলে ধরেছে। সোমালি অঞ্চল, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, ইথিওপিয়ার অন্যতম বৃহত্তম প্রশাসনিক এলাকা, যেখানে প্রধানত সোমালি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ বাস করে।

এই দুর্ঘটনা ইথিওপিয়ার ট্রেন ব্যবস্থার নিরাপত্তা এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে ট্রেন নিরাপত্তা জোরদারের জন্য পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এই দুর্ঘটনাটি ইথিওপিয়ার যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থার সংকট এবং অবকাঠামোগত সমস্যা তুলে ধরেছে। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া, বিশেষ করে পুরোনো এবং অতিরিক্ত বোঝা বহনকারী ট্রেনের বিষয়ে সতর্কতা গ্রহণ করা, যাতে ভবিষ্যতে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা রোধ করা যায়।

আন্তর্জাতিক শীর্ষ সংবাদ