বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গত ২২ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে তিনটি পৃথক মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশটি বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল দ্বারা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, গুমের অভিযোগে করা দুটি মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২০ নভেম্বর ধার্য করা হয়েছে এবং ২০১৯ সালের ১৮ ও ১৯ জুলাই রামপুরায় গণহত্যার ঘটনার জন্য শুনানি আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
গ্রেপ্তার হওয়া সেনা কর্মকর্তারা:
সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন:
-
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম (র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক)
-
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার
-
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান
-
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম
-
কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন
-
কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে)
-
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান (র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক)
-
লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন
-
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম
-
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম
-
মেজর মো. রাফাত বিন আলম (বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা)
-
মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন (ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক)
-
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী
-
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী
মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে ট্রাইব্যুনালের প্রাঙ্গণে নিরাপত্তার চাদরে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে বিশেষ প্রিজনভ্যানে করে নিয়ে আসা হয়। সকাল সোয়া ৭টায় এদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় এবং ৭:৩০ টায় পুলিশ সদস্যরা তাদের ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যান।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আশা করছি, আসামিদের দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু হবে এবং তাদের বিচার প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন হবে।”
এই মামলাগুলোর মধ্যে গুমের অভিযোগে করা দুটি মামলা এবং জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় রামপুরায় সংঘটিত গণহত্যার মামলা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ পেশ করার পর ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের পক্ষ থেকে পলাতক আসামিদের হাজির হতে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিশেষত শেখ হাসিনাসহ যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
এই মামলা গুলি মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থার সক্ষমতা প্রদর্শন করছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে দেশব্যাপী আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।