ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসিয়ান সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন না

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসিয়ান সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন না

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান)-এর আসন্ন সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যথাযথ সময়সূচি ও ব্যস্ততার কারণে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর এই সম্মেলনে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করবেন।

এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আসিয়ান সম্মেলনটি আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হবে। তবে ভারতীয় সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি।

সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে যে, ভারত ইতোমধ্যে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে যে আসিয়ান সম্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধিত্ব করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। এ ছাড়া, মোদি ভার্চুয়ালি আসিয়ান-ভারত সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে পারেন বলেও কিছু সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে।

গত কয়েক বছর ধরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসিয়ান-ভারত সম্মেলন এবং পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। তবে এবার, তার পরিবর্তে জয়শঙ্কর এই সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন। সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ অন্যান্য অংশীদার দেশগুলোর নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ট্রাম্প আগামী ২৬ অক্টোবর কুয়ালালামপুরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে, যেখানে তিনি দুই দিনের সফর করবেন।

এছাড়া, মোদির মালয়েশিয়া সফরের সঙ্গে কম্বোডিয়া সফরও নির্ধারিত ছিল। তবে মালয়েশিয়া সফর বাতিল হওয়ার ফলে কম্বোডিয়া সফরও আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।

ভারত-আসিয়ান সম্পর্কের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতায়। আসিয়ান ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক ১৯৯২ সালে খাতভিত্তিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। পরে ১৯৯৫ সালে এটি পূর্ণসংলাপ অংশীদারিত্বে পরিণত হয় এবং ২০০২ সালে সম্মেলন পর্যায়ে উন্নীত হয়। ২০১২ সালে এই সম্পর্কটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে রূপ নেয়, যা আজকের দিনে আরো গভীর ও বিস্তৃত হয়ে উঠেছে।

আসিয়ান সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে— ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ব্রুনাই, ভিয়েতনাম, লাওস, মিয়ানমার, ও কম্বোডিয়া। এই দেশগুলোতে ভারত বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক উল্লেখযোগ্য।

এ বছরের আসিয়ান সম্মেলনেও ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা, অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন ও আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভারতের প্রতিনিধিত্ব পরিবর্তন হওয়ায়, এর প্রভাব ভবিষ্যতে সম্পর্কের গতিপথে কীভাবে প্রতিফলিত হবে, তা পর্যবেক্ষণযোগ্য।

আন্তর্জাতিক শীর্ষ সংবাদ