লিওনেল মেসি এমএলএস গোল্ডেন বুট জিতলেন, নতুন চুক্তিতে ইন্টার মিয়ামিতে থাকবেন ২০২৮ সাল পর্যন্ত

লিওনেল মেসি এমএলএস গোল্ডেন বুট জিতলেন, নতুন চুক্তিতে ইন্টার মিয়ামিতে থাকবেন ২০২৮ সাল পর্যন্ত

যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকার (এমএলএস) এর ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় শুরু করলেন লিওনেল মেসি। এমএলএস কমিশনার ডন গারবারের উপস্থিতিতে চেজ স্টেডিয়ামে গোল্ডেন বুট পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তিনি। ২৮ ম্যাচে ২৯ গোল করে মেসি প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারটি লাভ করেন।

মেসি যখন গোল্ডেন বুট হাতে নিচ্ছিলেন, তখন গারবার অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত ছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা কখনোই কল্পনাও করতে পারিনি যে মেসি এই ক্লাব, এই শহর এবং এই লিগের জন্য এতটা প্রভাব ফেলবেন। তিনি এমএলএস-এর গতিপথই বদলে দিয়েছেন।”

গোল্ডেন বুট অর্জনের একদিন আগে ইন্টার মিয়ামি ঘোষণা করে যে, মেসি ২০২৮ সাল পর্যন্ত নতুন তিন বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তির ফলে, চল্লিশের কোঠায় পৌঁছানো সত্ত্বেও মেসি আরও কয়েক বছর মিয়ামির হয়ে খেলবেন।

গারবার আরও যোগ করেন, “মেসি এমন একজন খেলোয়াড়, যিনি ফুটবলকে ভিন্নভাবে ভাবেন। তার যে তীব্র আকাঙ্ক্ষা রয়েছে জেতার প্রতি, সেটিই তাকে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় বানিয়েছে।”

২০২৩ সালে ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মেসি ক্লাবটির ভাগ্য পাল্টে দেন। তার নেতৃত্বে ক্লাবটি জয়লাভ করে ২০২৩ সালের লিগস কাপ এবং ২০২৪ সালে সাপোর্টার্স শিল্ডও লাভ করে। ২০২৪ সালে এমএলএস ইতিহাসে সর্বোচ্চ পয়েন্টের রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি মেসি ব্যক্তিগতভাবে এমভিপি (মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার) পুরস্কারও জয় করেন।

এছাড়া, ২০২৫ সালের এমভিপি পুরস্কারের জন্যও তিনি অন্যতম ফেভারিট। যদি তিনি আবারও এমভিপি পুরস্কার জয় করেন, তবে মেসি এমএলএস ইতিহাসে টানা দুইবার এমভিপি জেতার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে নাম তুলবেন।

মেসির এমএলএস-এ যোগদান পরবর্তী সময়ে ইন্টার মিয়ামির বাজার মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়ে ১.২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ক্লাবটির টিকিট বিক্রি এবং জার্সি বিক্রিতেও নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে, যা এমএলএস-এর ইতিহাসে নজিরবিহীন।

গারবার মজার ছলে বলেন, “তিনি আসলে ‘ইউনিকর্ন অব ইউনিকর্নস’। তার চিন্তা, মনোযোগ এবং জয়ের ইচ্ছাই তাকে সর্বকালের সেরা বানিয়েছে।”

মেসির নতুন চুক্তি ঘোষণার পর, ইন্টার মিয়ামি ক্লাবটি সামাজিক মাধ্যমে এক বিশেষ ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে মেসি তার চুক্তি স্বাক্ষর করছেন ক্লাবের নতুন স্টেডিয়ামে। এই স্টেডিয়ামটি মিয়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে অবস্থিত এবং আগামী বছরই উদ্বোধন হবে।

গারবার মন্তব্য করেন, “এটি দেখায় যে ক্লাবটি কতটা পেশাদার এবং বুদ্ধিদীপ্তভাবে কাজ করছে।” মেসি এখন শুধু ইন্টার মিয়ামির নয়, পুরো আমেরিকার ফুটবলের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তিনি সত্যিই এক “গিফট দ্যাট কিপস অন গিভিং।”

মেসির গোল্ডেন বুট জয় এবং নতুন চুক্তির ঘোষণায় তিনি আরও একবার প্রমাণ করলেন যে, তার প্রভাব শুধু মাঠেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তিনি পুরো ফুটবল বিশ্বে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এসেছেন। ফুটবলকে কেবল খেলা নয়, বরং একটি শিল্প এবং কৃষ্টি হিসেবে তুলে ধরেছেন।

খেলাধূলা শীর্ষ সংবাদ