সুইজারল্যান্ডের নতুন অভিবাসন নীতি: আশ্রয়প্রার্থীদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ

সুইজারল্যান্ডের নতুন অভিবাসন নীতি: আশ্রয়প্রার্থীদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ

সুইজারল্যান্ড আগামী বছরের শুরু থেকে অভিবাসন নীতি কঠোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে দেশটির সরকার ঘোষণা করেছে, আশ্রয়প্রার্থীদের আর নিজ দেশ বা তৃতীয় কোনো দেশে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। এই নিষেধাজ্ঞা সুইজারল্যান্ডে বসবাসরত সব আশ্রয়প্রার্থী, অস্থায়ী সুরক্ষা পাওয়া এবং সুরক্ষার প্রয়োজন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।

তবে, আত্মীয়-স্বজনের মৃত্যুসহ জরুরি পরিস্থিতিতে আশ্রয়প্রার্থীদের বিশেষ অনুমতির মাধ্যমে ভ্রমণের সুযোগ থাকবে। তারা সুইজারল্যান্ডের অভিবাসন বিষয়ক সচিবালয় (এসইএম)-এ আবেদন করতে পারবেন, এবং আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পর কিছু সীমিত পরিস্থিতিতে তাদের ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে।

এই সিদ্ধান্তটি সুইস পার্লামেন্টে বুধবার গৃহীত হয়েছে এবং আগামী ২০২৪ সাল থেকে এটি কার্যকর হবে। ২০২৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুইস সরকার এই নীতিমালাটি চূড়ান্তভাবে কার্যকর করবে।

দেশটির ফেডারেল কাউন্সিল জানিয়েছে, তাদের অভিবাসন নীতি সংশোধন করার মূল লক্ষ্য হলো ২০২১ সালে সুইস পার্লামেন্টে অনুমোদিত “বিদেশি নাগরিক ও অন্তর্ভুক্তি আইন” বাস্তবায়ন করা। বিশেষ করে, ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার পর এই নীতিগুলো কার্যকর করার কাজটি কিছুটা বিলম্বিত হয়েছিল।

রাশিয়ার আক্রমণের কারণে অস্থায়ী সুরক্ষা পাওয়া ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের জন্য কিছু শিথিলতা থাকবে। তারা প্রতি ছয় মাসে ১৫ দিন ইউক্রেনে থাকার অনুমতি পাবেন, যা আগে প্রতি তিন মাসে ১৫ দিন ছিল। তবে, সাধারণভাবে এই নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনীয়দের জন্যও কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) এই নতুন নীতিমালাকে “অসম” বলে অভিহিত করেছে। সংস্থাটি বলেছে, এই নিষেধাজ্ঞা পালিয়ে আসা এবং নিপীড়নের শিকার বহু পরিবারের কঠিন পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়নি।

জার্মানি সহ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে এমন ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কিছুটা কার্যকর রয়েছে। তবে, সুইজারল্যান্ডের নতুন নীতিটি বেশ কিছু ব্যতিক্রমের সাথে অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় আরও কড়া হবে, যেহেতু এটি শুধু নিজ দেশেই নয়, তৃতীয় দেশেও ভ্রমণ নিষিদ্ধ করবে।

সুইজারল্যান্ডের এই পদক্ষেপ দেশটির অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করে তুলবে, এবং এতে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য সঙ্কট আরও বেড়ে যেতে পারে। বিশেষত, যাদের পরিবারগুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য এই নিয়মগুলো চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

আন্তর্জাতিক শীর্ষ সংবাদ