বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাস্তায় আন্দোলন করার কোনো উদ্দেশ্য নেই। বরং, এখন জনগণের কাছে পৌঁছানোর সময় এসেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিএনপি সাংঘর্ষিক বা হিংসাত্মক রাজনীতির দিকে যেতে চায় না, বরং গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট না করে, একত্রে কাজ করে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকতে হবে।
আমীর খসরু বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একসঙ্গে বসে আলোচনা করা কোনো সময় ছিল না।” তবে বর্তমানে তিনি মনে করেন, এই সংস্কৃতি পরিবর্তন হয়েছে এবং সকল দল একত্রে বসে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য আলোচনা করছে। আগামী নির্বাচনের সুষ্ঠু আয়োজন এবং একটি গণতান্ত্রিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “যতদূর মনে হয়, একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ সময় সংগ্রাম করতে হয়েছে, তবে আমরা এখনো সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। আমরা এক নির্বাচিত সংসদ সরকারের জন্য লড়াই করছি, তবে এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি।”
গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজে গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, জাতীয় জুলাই সনদে সই করার মাধ্যমে দলগুলো একটি ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করেছে, এবং এর মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অর্ডার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে তারা একত্রিত হবে।
অন্তরঙ্গভাবে রাজনৈতিক সহনশীলতা ও সম্মানজনক রাজনীতির গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, “আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।” তিনি বলেন, বিরোধী দলগুলো তাদের নিজ নিজ অবস্থান ও চিন্তা-ধারা বজায় রেখে যদি শ্রদ্ধার সঙ্গে একে অপরের মতামতকে গ্রহণ করে, তবে তা দেশের জন্য এক বিশেষ কল্যাণ বয়ে আনবে।
এছাড়া, তিনি আরও বলেন, দলগুলো মধ্যে বিভিন্ন মতাদর্শ ও রাজনৈতিক দর্শন থাকতে পারে, তবে তা বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য নয়। বরং, ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখা জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, “যতগুলো পরিবর্তন রাতারাতি আসবে না, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।”
আমীর খসরু মনে করেন, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং দেশ ও জনগণের স্বার্থে বিভিন্ন সমাধান নিয়ে আলোচনা চলবে। তাঁর মতে, রাজনীতির মধ্য দিয়ে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, যেসব সমাধান সম্ভব নয়, সেগুলো জনসম্মুখে আলোচনা করে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পন্থায় সমাধান খোঁজা হবে।


