বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন দাস টেস্ট অধিনায়কত্ব নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার বিষয়ে কিছু জানি না। বিসিবি যদি আমাকে যোগ্য মনে করে, তবে তারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং সিদ্ধান্ত নেবে।”
লিটন দাস বর্তমানে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই বছরের জুন মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর, নাজমুল হোসেন শান্ত টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর থেকে টেস্ট অধিনায়ক পদের ব্যাপারে নানা ধরনের আলোচনা চলছে। বিসিবি কর্তৃক টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজের নাম আলোচনায় ছিল, তবে লিটন দাসও এই পদের দৌড়ে এগিয়ে আছেন।
লিটন দাস বলেন, “টেস্ট অধিনায়ক হওয়া একজন খেলোয়াড় হিসেবে খুব বড় সম্মানজনক বিষয়। তবে, এখন পর্যন্ত বিসিবি কর্তৃক আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। তারা যদি আমাকে যোগ্য মনে করে, তখন তারা অবশ্যই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবে।”
বর্তমানে টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বে থাকা লিটন দাস বললেন, “টেস্ট অধিনায়কত্ব নিয়ে কোনো মন্তব্য করা আমার পক্ষে কঠিন। এটি শুধু একটি সম্মানজনক দায়িত্ব নয়, বরং এটা ক্রিকেটের প্রতি আমার ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধের অংশ।”
বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ের একটি নির্দিষ্ট চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশেষ করে, মিডল অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতা প্রায় নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে লিটন দাস বলেছেন, “প্রতিটি সিরিজেই এমনটা হয় না, কখনও টপ অর্ডার ভালো খেলতে পারে, আবার কখনও মিডল অর্ডার ভালো করে না। এতে কোনো সমস্যা নেই, ক্রিকেটে কখনও কখনও এমন ওঠাপড়া থাকে।”
বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন-আপে এই ধরনের উদ্বেগের মধ্যে, লিটন দাস মনে করেন, কোনো বিশেষ ধরনের গ্যাপ থাকলেই ব্যাটিং বিভাগের প্রতিটি অংশে আলোচনা চলে আসে। তিনি জানিয়েছেন, “ক্রিকেটের এই দিকটি স্বাভাবিক, তবে এটা প্রতিরোধের জন্য আমাদের উচিত অতিরিক্ত চাপ না নিয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়া।”
যেহেতু, নাজমুল হোসেন শান্ত টেস্ট অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে ওই পদের জন্য কোনো নতুন অধিনায়ক নিয়োগ দেওয়া হয়নি, তাই সবার দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের পরবর্তী টেস্ট অধিনায়ক নির্বাচনের দিকে। সম্প্রতি বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে যে, মেহেদী হাসান মিরাজ, যিনি বর্তমানে ওয়ানডে দলের অধিনায়ক, তাকে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য বিসিবি বিবেচনা করছে। তবে, লিটন দাসের নামও আলোচনায় রয়েছে এবং ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, তার টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
এই মুহূর্তে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বেশ ভালো ফর্মে রয়েছে এবং আগামীকাল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শুরু হতে যাচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে লিটন দাসের অবস্থান, এবং কীভাবে তিনি দলের ব্যাটিং সমস্যা মোকাবিলা করবেন, তা নিয়ে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে টেস্ট অধিনায়ক ঘোষণা করেনি, তবে লিটন দাস বা মেহেদী হাসান মিরাজ যে কেউই আগামী দিনে এই দায়িত্ব নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই পদে নিয়োগের জন্য ক্রিকেট বোর্ড বিভিন্ন দিক থেকে ভাবনা-চিন্তা করছে এবং শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে একজন নতুন অধিনায়ককে দায়িত্ব দেওয়া হবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব অতীতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে, যেখানে প্রতিটি সিদ্ধান্ত দলের কার্যক্ষমতা ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার জন্য প্রভাব ফেলতে পারে। সুতরাং, ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্ত দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।
এদিকে, লিটন দাসের ব্যাটিং কৌশল ও নেতৃত্ব গুণের প্রতি সমর্থন এবং তার দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আগামী দিনগুলোতে ভালো ফলাফলের দিকে এগিয়ে যেতে পারে, এই প্রত্যাশা ক্রিকেট মহলে।


