বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর সরকারি পদক্ষেপের জন্য ফ্রান্স তার সহায়তা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। ফরাসি দূতাবাস ঢাকায় গত রোববার (২৬ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “হিটমাইন্ড ফর উইমেন” উদ্যোগের সফলতার প্রশংসা করে তারা এ অঙ্গীকার করছে।
এই প্রকল্পটি সাতক্ষীরা ও গাজীপুরের ঝুঁকিপূর্ণ নারী জনগোষ্ঠীর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর চরম তাপমাত্রার প্রভাব নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে। এতে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো ভবিষ্যতের জনস্বাস্থ্য হস্তক্ষেপের জন্য মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেছে। প্রকল্পটি ‘টিম ফ্রান্স ফান্ড’ (এফইএফ) এর অধীনে সাজিদা ফাউন্ডেশন, ফরাসি গবেষণা ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (আইআরডি) এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত হয়েছে।
এই এক বছরের মেয়াদী পাইলট প্রকল্পটি বাংলাদেশের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের বিশেষত দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ নারী জনগোষ্ঠীর মধ্যে তাপমাত্রার অতিরিক্ত চাপ এবং তার মানসিক স্বাস্থ্য প্রতিক্রিয়া বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এটি মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে আক্রান্ত জনগণের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর গবেষণা করেছে, যার মধ্যে উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে।
ফরাসি দূতাবাস জানায়, এই গবেষণা ফলাফল ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্য নীতি ও কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করবে এবং প্রান্তিক জনগণের চাহিদা অনুযায়ী জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সহায়ক হবে।
রোববার, ফরাসি দূতাবাসের উপমিশনপ্রধান ফ্রেডেরিক ইনজা ও সাংস্কৃতিক অ্যাটাশে ব্যাপ্টিস্ট লেব্রেুর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রকল্পের ফলাফল সম্পর্কিত একটি ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে তারা জলবায়ু পরিবর্তন এবং তাপমাত্রার প্রভাবজনিত মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বুঝতে এবং প্রশমনে কীভাবে অগ্রগতিমূলক ফলাফল অর্জন করা হয়েছে তা তুলে ধরেন।
ফ্রান্সের দূতাবাস জানায়, এটি প্রমাণনির্ভর নীতি প্রণয়ন ও কার্যকর জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপে সহায়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা উদ্যোগ, যা আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশে প্রান্তিক জনগণের স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
ফ্রান্স সরকার বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য খাতে এই ধরনের গবেষণা কার্যক্রমে সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশেষত, তারা ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রান্তিক জনগণের স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গবেষণা, শিক্ষার ও জনসচেতনতায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দিকে মনোযোগ নিবদ্ধ করবে।
ফরাসি দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, “আমরা এই ধরনের গবেষণায় সহায়তা প্রদান করে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে চাই। ভবিষ্যতে এই ধরনের গবেষণা বাংলাদেশে আরও কার্যকর জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপে সহায়ক হবে।”
এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সামনে আরও ভালোভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করার সুযোগ সৃষ্টি হবে, বিশেষত ঝুঁকিপূর্ণ জনগণের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার দিক থেকে। ফ্রান্সের সহায়তা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে এমন একটি কাঠামো গড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের সঠিক মোকাবিলায় সহায়ক হবে।