ভারতীয় টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেতা সতীশ শাহ অকালেই প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুর সময় তিনি কিডনি রোগে ভুগছিলেন, তবে নিজেকে সুস্থ মনে করতেন। মৃত্যুর মাত্র দুই ঘণ্টা আগে পর্যন্ত তিনি সহকর্মী এবং বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সুস্থতার কথা জানিয়েছেন।
বিখ্যাত টেলিভিশন সিরিয়াল ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’-এর স্রষ্টা জেডি মাজেথিয়া ভারতীয় গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শনিবার সকাল ১১টায় সতীশ শাহ অতীশ কাপাডিয়া নামের এক সহকর্মীর সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেন এবং দুপুর ১টার দিকে রত্না পাঠক, সতীশের স্ত্রী, এর সঙ্গে ফোনে আলাপ করেন।
মাজেথিয়া আরও বলেন, “আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে এমন কিছু ঘটেছে। গতকালও (শুক্রবার) তিনি আমাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আমার গলা শুনে কী মনে হচ্ছে? আমি একদম সুস্থ আছি।’ তার কথা শুনে মনে হচ্ছিল, তিনি খুব ভালো আছেন। এমনকি তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি তোমাদের বাড়ি আসব, কিন্তু তার আগেই তিনি চলে গেছেন।”
সতীশ শাহ প্রায় চার দশক ধরে বলিউড এবং টেলিভিশনে অবদান রেখে গেছেন। তার অভিনীত চরিত্রগুলো ভারতীয় দর্শকদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে আছে। তিনি ‘জানে ভি দো ইয়ারো’ (১৯৮৩) সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক করেন। এরপর তিনি ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’, ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’-এর মতো অনেক বিখ্যাত সিনেমায় অভিনয় করেন। এছাড়া তিনি পরিচালকদের মধ্যে সুরজ বরজাত্যা, ফারহা খান, রাকেশ রোশন-এর মতো বলিউডের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে কাজ করেছেন।
তবে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ ছিল ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’ নামক টেলিভিশন সিরিয়াল। এই ধারাবাহিকের মাধ্যমে তিনি তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এবং ভারতীয় টেলিভিশনের ইতিহাসে একটি আইকনিক চরিত্র হিসেবে তার স্থান প্রতিষ্ঠিত হয়।
সতীশ শাহ ছিলেন একজন অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় অভিনেতা, কিন্তু তার ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত নম্র এবং সহানুভূতিশীল। সহকর্মী এবং বন্ধুদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত ভালো। তার মৃত্যুর পর অনেক সহকর্মী, অনুপম খের সহ, তার স্মৃতি ও কাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
তার পরিবারের জন্য সতীশ শাহর অকাল প্রস্থান অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সতীশ শাহের স্ত্রী রত্না পাঠক এবং অন্যান্য পরিবার সদস্যরা এই শোকজনক সময় কাটাচ্ছেন, যখন সতীশের মৃত্যুর পর ভারতে এবং বিদেশে তার অনুরাগীদের মধ্যে শোকের ছায়া বিরাজ করছে।
সতীশ শাহের মৃত্যুর পর তার কর্মজীবন এবং শিল্পের প্রতি তার অবদান চিরকাল মনে রাখা হবে। তার চরিত্রগুলো, বিশেষ করে টেলিভিশনের ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’ ধারাবাহিকে, ভারতীয় দর্শকের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবে।


