রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা সম্পূর্ণভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। ল্যাভরভ বলেন, যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন, তবুও যুক্তরাষ্ট্র এখনও বৈঠকের সময় বা স্থান চূড়ান্ত করেনি।
রোববার, হাঙ্গেরির ইউটিউব চ্যানেল আল্ট্রাহাং-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, ল্যাভরভ বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বুদাপেস্টে পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, এবং পুতিন এতে সম্মতি জানিয়েছেন। তবে, এই বৈঠকটির প্রস্তুতি এখনও নিশ্চিত হয়নি, কারণ যুক্তরাষ্ট্রই সিদ্ধান্ত নেবে কখন এবং কোথায় এটি হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ভদ্র মানুষ, এবং কেউ আমাদের আমন্ত্রণ জানালে আমরা অবশ্যই সম্মতি জানাই। তবে, পরে যদি সেই আমন্ত্রণ বাতিল করা হয়, তার জন্যও দায়ভার তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) ওপরই।”
ল্যাভরভ বলেন, সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও-এর সাথে ফোনালাপে তারা ভালো আলোচনা করেছেন। তার মতে, এই আলোচনা এতটাই ফলপ্রসূ ছিল যে, আপাতত নতুন কোনো বৈঠকের প্রয়োজন অনুভূত হয়নি। তিনি বলেন, “গত আগস্টে আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের ফলাফল নিয়ে আলোচনা হয়, তবে সে আলোচনা পরবর্তী বৈঠক বা কথোপকথনের বিষয়ে কোনো নতুন প্রসঙ্গ উত্থাপন করেনি।”
ল্যাভরভ ইউক্রেন প্রসঙ্গে বলেন, রাশিয়ার জন্য বাফার জোন প্রয়োজন, কারণ ইউক্রেন এখনও রুশ ভূখণ্ডে গোলাবর্ষণ, বোমাবর্ষণ এবং ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, এমনকি ব্রিয়ানস্ক, বেলগোরদ এবং কুরস্ক অঞ্চলে হামলা হচ্ছে, যেগুলো কখনও বিতর্কিত ছিল না।
রাশিয়া এখনও ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ রাখতে চায়, যাতে তারা ন্যাটোয় যোগ না দেয়, পারমাণবিক অস্ত্র না রাখে এবং রুশভাষীদের অধিকার নিশ্চিত করা হয়।
ল্যাভরভ অভিযোগ করেন যে, ইউরোপীয় দেশগুলো এবং ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে, যা রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সংলাপকে বাধাগ্রস্ত করছে। তিনি বলেন, “ইউরোপীয় দেশগুলো এবং ইউক্রেন নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির পক্ষে চাপ দিচ্ছে, যা রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা নিয়ে আরো সমস্যা তৈরি করছে।”
ল্যাভরভ ফিনল্যান্ডের ন্যাটো সদস্যপদ নিয়েও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “এটি একটি ভুল সিদ্ধান্ত। এই ধরনের পদক্ষেপ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও জটিল করছে।”
রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখনও উত্তেজনাপূর্ণ এবং বৈঠকটির সম্ভাবনা ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। ল্যাভরভের মন্তব্য থেকে পরিষ্কার, রাশিয়া একটি শীর্ষ বৈঠক চায়, তবে সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে।


