বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান তাদের দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং বিনিয়োগ সহযোগিতাকে নতুন কৌশলগত উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) নবম সভায় এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।

উল্লেখযোগ্য এই সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক। প্রায় দুই দশক পরে অনুষ্ঠিত এই সভাটি দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও গভীর করার লক্ষ্যে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

সভায় বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, জ্বালানি, গবেষণা ও উচ্চ শিক্ষা, ব্যাংকিং, পর্যটন, খেলাধুলা, এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। উভয় পক্ষই বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনার প্রতি মনোযোগ দেয় এবং উক্ত খাতে আরো সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে।


বৈঠকে সরাসরি বিমান এবং নৌযান সংযোগ স্থাপন, এবং বন্দর ও লজিস্টিক ব্যবহারের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্যিক উন্নয়নের ওপরও আলোচনা হয়। উভয় দেশ এই সংযোগ বৃদ্ধির জন্য একসাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।


সভা শেষে, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান সরকারের মধ্যে হালাল বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এবং পাকিস্তান হালাল অথরিটি (পিএইচএ) এর মধ্যে এই স্মারক স্বাক্ষরিত হয়, যা ভবিষ্যতে হালাল পণ্য ব্যবসার সম্প্রসারণে সহায়তা করবে। সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাকসূরা নূর এবং পাকিস্তান সরকারের পক্ষে ঢাকাস্থ পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার স্বাক্ষর করেন।


উভয় পক্ষ তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। তারা আগামী ১০ম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের সভা ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে, যা পারস্পরিক আলোচনা এবং সুবিধাজনক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।

এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করবে এবং দুটি দেশের জন্য পারস্পরিক লাভের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

জাতীয়