চট্টগ্রামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতেই হারের মুখে বাংলাদেশ, ব্যাটিং ব্যর্থতায় হতাশা

চট্টগ্রামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতেই হারের মুখে বাংলাদেশ, ব্যাটিং ব্যর্থতায় হতাশা

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাঠে হোয়াইটওয়াশ করে ফেরা বাংলাদেশ এবার নিজ মাটিতে সিরিজের সূচনাতেই হোঁচট খেল। চট্টগ্রামের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ১৪৯ রানে অলআউট হয়েছে টাইগাররা। ফলে ১৬ রানের জয়ে সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বাংলাদেশের রান তাড়ার শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। মাত্র ৭৭ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে দল কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে। এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন তানজিম হাসান সাকিব ও নাসুম আহমেদ। সপ্তম উইকেটে তাদের ৪০ রানের জুটি কিছুটা আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত সেটি বাংলাদেশের পরাজয় ঠেকাতে যথেষ্ট হয়নি। তানজিম সাকিব করেন ৩৩ রান, আর নাসুম আহমেদ ১৩ বলে ২০ রান করে আউট হন। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান আসে সাকিবের ব্যাট থেকেই।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল বলেন, বাংলাদেশের শেষদিকের জুটি তাদের চাপে ফেলেছিল। তাঁর ভাষায়, “হ্যাঁ, (তানজিম ও নাসুমের জুটি ভয় ধরিয়েছিল)। এটিই প্রমাণ করে, বাংলাদেশের কোনো স্বীকৃত ব্যাটার যদি দীর্ঘ সময় উইকেটে থাকত, তাহলে ম্যাচটি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যেত। শেষের দিকে উইকেট কিছুটা ভেজা ছিল, তবু আমাদের বোলাররা পরিকল্পনায় অটল থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নিয়েছে, যা জয় নিশ্চিত করেছে।”


পাওয়েল মনে করেন, সিরিজের পরবর্তী ম্যাচগুলোতেও শিশির বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, “আমরা জানতাম না এতটা শিশির থাকবে। আজ রাতেও এর প্রভাব ছিল বেশ স্পষ্ট। শেষের দুই ম্যাচে আমরা সেটি বিবেচনায় রাখব। শিশির বল নিয়ন্ত্রণ কঠিন করে দেয়, তাই টস এবং দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং কৌশল গুরুত্বপূর্ণ হবে।”

মিরপুরের কালো মাটির উইকেট নিয়ে চলমান বিতর্কের প্রসঙ্গেও কথা বলেন পাওয়েল। তিনি চট্টগ্রামের উইকেটকে তুলনামূলক ভালো বলে উল্লেখ করেন, “৫০ ওভারের ক্রিকেটে আমরা যেমন উইকেট দেখেছি, তার তুলনায় এটা অনেক ভালো। এখানে ব্যাটার ও বোলার উভয়ের জন্যই সুযোগ ছিল। রান উৎসবের মতো না হলেও এটি ভালো ক্রিকেটীয় উইকেট—যেখানে ভালো ব্যাটিং করলে রান পাওয়া যায়, আবার ভালো বল করলে উইকেটও মিলবে।”


বাংলাদেশের ইনিংসে আবারও ফুটে উঠেছে আগের সমস্যা—শীর্ষ ও মধ্যক্রমের ব্যাটারদের ধারাবাহিক ব্যর্থতা। ওপেনার ও সিনিয়র ব্যাটারদের কেউই ইনিংস গড়তে পারেননি। ইনিংসের মাঝামাঝি পর্যায়ে একের পর এক উইকেট হারিয়ে চাপ তৈরি হয়, যা থেকে দল আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাটিং অর্ডারে স্পষ্ট পরিকল্পনার অভাব এবং চাপ সামলানোর অক্ষমতা এখন দলের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হিসেবে দেখা দিচ্ছে। ম্যাচের পর বাংলাদেশ দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনায়ও বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।


সিরিজে টিকে থাকতে হলে পরবর্তী ম্যাচে ব্যাটিং ইউনিটের উন্নতি করতেই হবে। বিশেষত শীর্ষ সারির ব্যাটারদের দীর্ঘ ইনিংস খেলার ওপর জোর দিচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আগামী ম্যাচে দলীয় পরিবর্তনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। টাইগাররা চাইবে, ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনতে।

খেলাধূলা