আইন ও আদালত ডেস্ক | ঢাকা | মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
অর্থ আত্মসাতের একাধিক মামলায় গ্রেফতার বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার বাহারকে মঙ্গলবার সকালে আদালতে আনার পথে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, জামিন শুনানির জন্য খায়রুল বাশারকে আদালতে হাজির করা হলে, এজলাসে প্রবেশের সময় কয়েকজন অভিযোগকারী তার ওপর শারীরিকভাবে হামলা চালায়। পরে পুলিশ দ্রুত হস্তক্ষেপ করে তাকে নিরাপদে আদালতের ভেতরে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় এক ব্যক্তিকে আটক করা হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, খায়রুল বাশার শতাধিক মামলার আসামি হিসেবে আদালতে উপস্থিত হন। নিরাপত্তার কারণে পুলিশ তাকে মূল সড়ক এড়িয়ে বিকল্প পথ দিয়ে এজলাসে নিয়ে আসে। এজলাসের দরজায় পৌঁছানোর মুহূর্তে হামলার ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলে কিছু সময় উত্তেজনা দেখা দিলেও আদালত কক্ষে শুনানি স্বাভাবিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে তাকে ফের হাজতখানায় নেওয়া হয়।
ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম বলেন, “মারধরের সময় পুলিশের একজন সদস্য আহত হন। তবে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। একজনকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
তবে সংশ্লিষ্ট আহত পুলিশ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আহত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
খায়রুল বাশার বাহার ৯৯টি মামলায় জামিন আবেদন করেন। এর মধ্যে আদালত ১৪টি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেন। এসব মামলার অধিকাংশই চেক সংক্রান্ত অপরাধ বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। জামিনের আদেশ দেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জিয়াদুর রহমান।
বেঞ্চ সহকারী পারভেজ আহমেদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক জানান, খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে বর্তমানে প্রায় ৩০০টি মামলা চলছে, যেখানে তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী তাদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনেছেন। অভিযোগকারীদের দাবি, বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেখিয়ে তিনি ও তার প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
একজন অভিযোগকারী বলেন, “আমরা প্রতারণার শিকার হয়েছি, আমাদের টাকার কোনো হদিস নেই।” তবে তিনি হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
পুলিশ জানায়, আদালত প্রাঙ্গণে হামলার ঘটনায় আলাদা কোনো মামলা করা হয়নি। তবে ঘটনাটি নিয়ে মৌখিক তদন্ত চলছে। আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করার বিষয়েও আলোচনায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আইনজীবীরা মনে করছেন, এমন ঘটনা বিচারিক নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক। আদালত প্রাঙ্গণে আসামি বা অভিযোগকারীদের শারীরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে তারা মত দেন।


