ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহত ১৮, যুদ্ধবিরতির টেকসইতা নিয়ে উদ্বেগ

ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহত ১৮, যুদ্ধবিরতির টেকসইতা নিয়ে উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের সামরিক হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এসব হামলার ঘটনা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশনার পর গাজার বিভিন্ন স্থানে ঘটে। রাফাহ অঞ্চলে এক বন্দুক হামলায় ইসরায়েলি সৈন্য আহত হওয়ার পর নেতানিয়াহু এই ‘তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া’ নির্দেশ দেন।

হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসাম ব্রিগেডস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। তারা জানায়, নিখোঁজ এক বন্দির মরদেহ হস্তান্তর স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তারা সতর্ক করেছে, ইসরায়েলের বড় ধরনের উস্কানিমূলক কার্যক্রম ঘটালে গাজায় মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ ব্যাহত হবে এবং বাকী ১৩ জন জিম্মির মরদেহ উদ্ধারে বিলম্ব হতে পারে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৯৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে সীমিত করা হয়েছে জরুরি ত্রাণ পৌঁছানোর কার্যক্রম, যা সাধারণ মানুষের জীবিকা ও স্বাস্থ্যঝুঁকির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্স ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পরও দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতি এখনও কার্যকর আছে। তিনি বলেন, “ছোটখাটো সংঘর্ষ হতে পারে। আমরা জানি গাজায় একজন ইসরায়েলি সৈন্য আহত হয়েছেন। আমরা আশা করি ইসরায়েল জবাব দেবে, তবুও শান্তি টেকসই থাকবে।”

হামাস নেতৃবৃন্দ রাফাহে সংঘটিত ঘটনাকে তাদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বলে জানিয়েছে। হামাস নেতা সুহাইল আল-হিন্দি মরদেহ উদ্ধারে কিছু অসুবিধার কথা তুলে ধরে উল্লেখ করেছেন, বাকি মরদেহ উদ্ধারের বিলম্বের দায় ইসরায়েলের ওপর বর্তায়।

গাজার নিরাপত্তা ও মানবিক পরিস্থিতি অব্যাহতভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি শুরুর পরও স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, কারণ ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও স্থল অভিযান সম্ভাব্য শান্তি প্রক্রিয়াকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। আহতদের চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি মৌলিক খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মানবিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর কাজ সীমিত। যুদ্ধবিরতির টেকসইতা এবং নিহতদের মরদেহ উদ্ধারের কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর গাজায় অবস্থার দিকে রয়েছে।

এই পরিস্থিতি পূর্ব-পশ্চিম তটে উত্তেজনা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরি প্রভাব ফেলছে। দীর্ঘমেয়াদে, যুদ্ধবিরতি কার্যকরভাবে রক্ষা না হলে গাজার জনগণের ওপর মানবিক চাপ বৃদ্ধি এবং অঞ্চলটিতে স্থায়ী শান্তি স্থাপনের সম্ভাবনা সংকুচিত হতে পারে।

গাজার সাম্প্রতিক হামলা, নিহত ও আহতদের সংখ্যা এবং মরদেহ উদ্ধারে বিলম্ব ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের সংবেদনশীলতা ও জটিলতা আরও উন্মোচিত করেছে। মানবিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব বাড়ছে।

আন্তর্জাতিক