আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও ফিলিস্তিনের গাজায় প্রতিশ্রুত ত্রাণের মাত্র এক-চতুর্থাংশই প্রবেশ করছে। ইসরায়েলি বিধিনিষেধের কারণে ২৪ লাখের বেশি মানুষ মৌলিক জিনিসপত্রের তীব্র সংকটে রয়েছেন। রোববার (২ নভেম্বর) আল জাজিরার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত গাজায় ৩ হাজার ২০৩টি বাণিজ্যিক ও ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। দৈনিক গড়ে মাত্র ১৪৫টি ট্রাকের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা নির্ধারিত ৬০০ ট্রাকের মাত্র ২৪ শতাংশ। গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ ও বাণিজ্যিক পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে বাধাগ্রস্ত করছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ত্রাণ কনভয়গুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত ও সংকীর্ণ রুটে যেতে হচ্ছে, যা মারাত্মক যানজট সৃষ্টি করছে। তিনি আরও জানান, ত্রাণ কার্যক্রম জোরদারে অতিরিক্ত সীমান্তপথ এবং অভ্যন্তরীণ রুট চালুর প্রয়োজন রয়েছে।
মানবিক সংস্থা ও স্থানীয় কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, ত্রাণের সীমিত প্রবাহের কারণে খাদ্য, পানি ও ওষুধের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দুই বছরের ইসরায়েলি হামলার ফলে বহু পরিবার এখনও আশ্রয়হীন, ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করে ইসরায়েলি বাহিনী শনিবারও গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসে বিমান, কামান ও ট্যাংকের গোলাবর্ষণে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের পূর্বদিকে কয়েকটি আবাসিক ভবনও ধ্বংস হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ড্রোন ও ভারী গোলাবর্ষণের কারণে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২২২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫৯৪ জন আহত হয়েছেন।
মানবাধিকার ও ত্রাণ সংস্থাগুলো ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে কোনও শর্ত বা বিধিনিষেধ ছাড়াই ত্রাণ সামগ্রী গাজায় প্রবেশ করতে পারে এবং চলমান মানবিক সংকটের মাত্রা কমানো যায়।


