আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে রাজ্যের শেভেলা মন্ডলে ভয়াবহ এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীদের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনাকবলিত বাসটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। একটি ট্রাক বিপরীত দিক থেকে রং সাইড দিয়ে এসে বাসটিকে সজোরে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই বেশ কয়েকজন প্রাণ হারান। সংঘর্ষের পরপরই বাস ও ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং যাত্রীরা ভেতরে আটকে পড়েন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজে অংশ নেন। পরে পুলিশ ও দমকলকর্মীরা এসে আহতদের উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠায়। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাকটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল এবং চালক নিয়ন্ত্রণ হারান।
এর দুই দিন আগে, শনিবার ভোরে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের ফালৌদি জেলার মতোদা গ্রামের কাছে ‘ভারতমালা’ মহাসড়কে আরেকটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ১৮ জন নিহত হন। পুলিশ জানায়, যাত্রীবাহী একটি বাস রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেলারের পেছনে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই অধিকাংশ যাত্রী প্রাণ হারান।
রাজস্থানের দুর্ঘটনায় নিহতরা সবাই জোধপুরের সুরসাগর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তারা বিকানার জেলার কোলায়াত মন্দিরে পূজা শেষে ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।
মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে দুই রাজ্যে সংঘটিত এসব ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ভারতের বিভিন্ন মহলে গভীর শোক ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে দেশজুড়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ভারতের জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে দেড় লাখের বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। অতিরিক্ত গতি, যানবাহনের দুরবস্থা এবং ট্রাফিক আইন অমান্য করা এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
তেলেঙ্গানা ও রাজস্থানের সাম্প্রতিক দুর্ঘটনাগুলো দেশটির সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা ও নজরদারির ঘাটতির নতুন উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে অবকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কার্যকর ট্রাফিক আইন প্রয়োগ না হওয়ায় এমন প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা বারবার ঘটছে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে


