জাতীয় ডেস্ক:
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিস ভবনে সার্ভার স্টেশন নির্মাণের লক্ষ্যে দেশের ২৪ জন জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে ভূমি বরাদ্দের আবেদন করেছে। কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, সারাদেশে মোট ৩৫টি নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে একটি আঞ্চলিক, দুটি জেলা ও ৩২টি উপজেলা নির্বাচন অফিস।
ইসির গবেষণা ও প্রকাশনা শাখার উপপ্রধান (উপসচিব) মুহাম্মদ মোস্তফা হাসানের স্বাক্ষরিত ৩ নভেম্বরের এক চিঠিতে জেলা প্রশাসকদের কাছে ভূমি বরাদ্দের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘নির্বাচনী ডাটাবেজের জন্য উপজেলা/থানা, জেলা ও আঞ্চলিক সার্ভার স্টেশন নির্মাণ এবং জেলা সার্ভার স্টেশন ভবন ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রস্তাবিত প্রকল্পের ডিপিপি (Development Project Proposal) ইতোমধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রয়োজনীয় ভূমি বরাদ্দ নিশ্চিত হলে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াকরণ করা হবে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ভোট, ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সেবামূলক কার্যক্রম নির্বিঘ্নভাবে পরিচালনার জন্য এসব নতুন ভবন নির্মাণ এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে অনেক জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিস পর্যাপ্ত অবকাঠামো না থাকায় সার্ভার ও ডাটাবেজ কার্যক্রমে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস, জেলা নির্বাচন অফিস ও উপজেলা নির্বাচন অফিস ভবন (সার্ভার স্টেশন) নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি বরাদ্দের ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অনুকূলে সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সচিবের কাছে আনুষ্ঠানিক পত্র পাঠানোর জন্যও বলা হয়েছে।
যে ২৪ জেলা প্রশাসককে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন— ঢাকা, গাজীপুর, মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, বগুড়া, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, বরগুনা, মেহেরপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জের ডিসিরা।
প্রকল্প অনুযায়ী, ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের জন্য ন্যূনতম ২৫ শতাংশ ভূমি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। গাজীপুর ও মাদারীপুর জেলা নির্বাচন অফিসের জন্য ন্যূনতম ২০ শতাংশ ভূমি প্রয়োজন। পাশাপাশি ৩২টি উপজেলার জন্য প্রত্যেকটিতে ন্যূনতম ১০ শতাংশ করে ভূমি বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
যে ৩২টি উপজেলায় ভূমি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো— লৌহজং, গাজীপুর সদর, সালথা, ডাসার, কালুখালী, শাহজাহানপুর, নলডাঙ্গা, চৌহালী, বিরল, তালতলী, মুজিবনগর, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, লালমাই, তিতাস, আশুগঞ্জ, বিজয়নগর, হাইমচর, মতলব উত্তর, কমলনগর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সুবর্ণচর, কর্ণফুলী, সন্দ্বীপ, কক্সবাজার ঈদগাঁও, গুইমারা, দক্ষিণ সুরমা, শায়েস্তাগঞ্জ, জুড়ী, শান্তিগঞ্জ, দিরাই ও মধ্যনগর।
প্রস্তাবিত এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ইসির তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী কার্যক্রম আরও শক্তিশালী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে ভোটার ডাটাবেজ ব্যবস্থাপনা, তথ্য সংরক্ষণ ও এনআইডি কার্যক্রমে দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের সমন্বয় ও তদারকিতেও সুবিধা মিলবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন।


