সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের ওয়াশিংটন সফর ১৮ নভেম্বর, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে চুক্তি আলোচনার সম্ভাবনা

সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের ওয়াশিংটন সফর ১৮ নভেম্বর, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে চুক্তি আলোচনার সম্ভাবনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান আগামী ১৮ নভেম্বর সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে যাবেন। সেখানে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা সোমবার (৩ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দুই নেতার বৈঠকে প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি ও সেমিকনডাক্টর খাতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে, যা উভয় দেশের কৌশলগত স্বার্থ জোরদারে ভূমিকা রাখছে বলে কূটনৈতিক সূত্রের ধারণা।

গত মে মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সৌদি সফরের সময় দুই দেশ ১৪২ বিলিয়ন ডলারের একাধিক সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে। ওই চুক্তিগুলোর মধ্যে ছিল মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্পে সৌদি বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি খাতে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির উদ্যোগ। এছাড়া, আমেরিকান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে উন্নত সেমিকনডাক্টর চিপ সৌদি আরবে রপ্তানির বিষয়ে একটি সম্ভাব্য চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্রাউন প্রিন্সের সফরে দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং উদীয়মান এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) খাতে পারস্পরিক বিনিয়োগের বিষয়েও আলোচনা হবে। ওয়াশিংটন ও রিয়াদের মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এআই, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও সাইবার নিরাপত্তা খাতে অংশীদারিত্বের উদ্যোগ বেড়েছে।

এদিকে, গত সপ্তাহে সৌদি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘হিউমেইন’ এবং মার্কিন কোম্পানি কোয়ালকম টেকনোলজিসের মধ্যে একটি নতুন চুক্তি ঘোষণা করা হয়। এ সহযোগিতার লক্ষ্য সৌদি আরবকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে একটি বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। প্রকল্পটি এআই-নির্ভর পরিষেবা উন্নয়নে সহায়তা করবে এবং এটি বিশ্বের প্রথম সম্পূর্ণরূপে অপ্টিমাইজড ‘এজ-টু-ক্লাউড হাইব্রিড এআই প্ল্যাটফর্ম’ হিসেবে কাজ করবে বলে জানানো হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, মোহাম্মদ বিন সালমানের আসন্ন সফর দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে, প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বৃদ্ধি এবং সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নে সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হোয়াইট হাউস এখনও বৈঠকের সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি প্রকাশ করেনি, তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, দুই নেতার আলোচনায় আঞ্চলিক নিরাপত্তা, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন পরিস্থিতি, এবং বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারের স্থিতিশীলতা বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। সফরের শেষে যৌথ বিবৃতি প্রকাশের সম্ভাবনাও রয়েছে।

আন্তর্জাতিক