১২ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকে ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের আবেদন করেছে

১২ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকে ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের আবেদন করেছে

অর্থনীতি ডেস্ক

দেশি ও বিদেশি মোট ১২টি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন জমা দিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, ডিজিটাল ব্যাংকিং অব ভুটান-ডি কে, আমার ডিজিটাল ব্যাংক-২২ এমএফআই, ৩৬ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, বুস্ট-রবি, প্রস্তাবিত আমার ব্যাংক, অ্যাপ ব্যাংক-ফার্মারস, নোভা ডিজিটাল ব্যাংক (বাংলালিংক ও স্কয়ার), মৈত্রি ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, উপকারি ডিজিটাল ব্যাংক, মুনাফা ইসলামী ডিজিটাল ব্যাংক (আকিজ) এবং বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আর্থিক খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতেই ডিজিটাল ব্যাংক চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ব্যাংকগুলো সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক হবে, ফলে কোনো শাখা, উপশাখা বা এটিএম বুথের প্রয়োজন হবে না। গ্রাহকরা মোবাইল অ্যাপ ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।

নীতিমালা অনুযায়ী, একটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনে ন্যূনতম ৩০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়া। পাশাপাশি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকেও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

২০২৩ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংক নীতিমালা অনুমোদন করে। তখন প্রাথমিকভাবে ন্যূনতম মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২৫ কোটি টাকা। পরবর্তীতে তা সংশোধন করে ৩০০ কোটি টাকা করা হয়। তুলনামূলকভাবে, বর্তমানে প্রচলিত ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় ন্যূনতম ৫০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন প্রয়োজন হয়।

ডিজিটাল ব্যাংকগুলোর লাইসেন্স প্রদান করা হবে ১৯৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী। এসব ব্যাংকের পেমেন্ট সার্ভিস পরিচালিত হবে ২০১৪ সালের বাংলাদেশ পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশন অনুসারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ২৬ আগস্ট ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য আবেদন আহ্বান করে। প্রাথমিকভাবে আবেদন গ্রহণের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩০ সেপ্টেম্বর। তবে প্রস্তাবনা প্রস্তুত ও প্রয়োজনীয় দলিলপত্র জমা দেওয়ার সময় বিবেচনায় রেখে সময়সীমা বাড়িয়ে আগামী ২ নভেম্বর বিকেল ৬টা পর্যন্ত করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সক্ষমতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সীমিত সংখ্যককে ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংকিং যুগে প্রবেশের সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অর্থ বাণিজ্য