রাজনীতি ডেস্ক
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা দিয়েছেন যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
পোস্টে তিনি লেখেন, “এই নির্বাচন আমার শেষ নির্বাচন।” একই সঙ্গে যারা এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাননি, তাদের প্রতি হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই শীর্ষ নেতা। তিনি উল্লেখ করেন, “বিশ্বাস রাখুন, ইনশাআল্লাহ দল আপনাদের যথাযথ দায়িত্ব ও সম্মান দেবে।”
ফেসবুক পোস্টে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “মহান আল্লাহর রহমতে বিএনপি আমাকে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে মনোনীত করেছে। আমি বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং দলের সকল নেতা-নেত্রী ও কর্মীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। আজীবন আমার পাশে থাকার জন্য সকল কর্মীর প্রতি আমার গভীর ভালোবাসা রইল।”
রাজনীতিতে নিজের দীর্ঘ যাত্রার প্রসঙ্গ টেনে তিনি লেখেন, “আমরা যারা সারাজীবন রাজনীতি করেছি, জেলে গেছি, আমাদের প্রত্যেকেরই একটা গল্প আছে। অনেকেই তা জানে না। আমি যখন ১৯৮৭ সালে সিদ্ধান্ত নিই আবার রাজনীতিতে ফিরব, তখন আমার মেয়ে দুটো একদম ছোট ছিল, ঢাকায় পড়ত। আমার স্ত্রী তখন খুবই তরুণী ছিলেন। তিনি প্রথমে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন, বুঝতে পারছিলেন না আমরা কী ভয়াবহ অনিশ্চিত জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছি।”
ব্যক্তিগত জীবনের এক স্মৃতিচারণায় বিএনপি মহাসচিব লিখেন, “আমার মেয়ে দুটোর হাত ধরে স্ত্রী স্কুলে নিয়ে যেতেন, ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতেন। মনে আছে, বড় মেয়ের একটা অপারেশন হওয়ার সময় আমি সারা রাত গাড়িতে ছিলাম ঢাকার পথে, যেন তার পাশে থাকতে পারি। অপারেশনের সময় আমি মসজিদে ছিলাম, দোয়া করছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “এরকম গল্প আমাদের হাজারো নেতা-কর্মীর আছে, যাদের জীবন রাজনীতি আর ত্যাগের সঙ্গে জড়িত। অন্য কোনো দিন এসব গল্প বলব, যদি আল্লাহ চান।”
পোস্টের শেষাংশে মির্জা ফখরুল দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে দোয়া কামনা করেন। তিনি লেখেন, “আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমাদের দলের প্রতিটি নেতাকর্মীর জন্য দোয়া করবেন। আমরা সবাই মিলে আপনাদের পাশে থাকব এবং কাজ করব ইনশাআল্লাহ।”
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির মহাসচিব হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এর আগে একাধিকবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর এই ঘোষণা বিএনপির রাজনীতিতে নতুন এক পর্বের ইঙ্গিত বহন করছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা।


