রাজনীতি ডেস্ক :
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি ইসলামি দল আজ (বৃহস্পতিবার) প্রধান উপদেষ্টার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মারকলিপি পেশ করবে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলগুলোর নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরে সমবেত হন। এরপর সেখান থেকে পুরানা পল্টন অভিমুখে মিছিল শুরু হয়। শাপলা চত্বর থেকে পুরানা পল্টন পর্যন্ত মিছিলের নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। পল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রচার সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুমন জানান, মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মিছিলে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস ও অন্যান্য শরিক দলগুলোর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত রয়েছেন। সমাবেশ শেষে প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিত স্মারকলিপি পেশ করবে।
এর আগে বুধবার আগারগাঁওয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের দাবিতে তারা বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিত স্মারকলিপি জমা দেবেন। তিনি জানান, তাদের প্রধান দাবি হলো—গণভোট অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনের আগে এবং পৃথক দিনে অনুষ্ঠিত হতে হবে।
দলগুলোর পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—
১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য সরকারিভাবে আদেশ জারি এবং নভেম্বরে গণভোট আয়োজন;
২. আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সংসদের দুই কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব;
৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নিশ্চিত করা;
৪. অতীতের রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান করা;
৫. জাতীয় পার্টি ও ১৪-দলীয় জোটের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি।
ইসলামি আটটি রাজনৈতিক দল হলো—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
দলগুলোর নেতারা জানিয়েছেন, তাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য হলো নির্বাচনের আগে জনগণের মতামত যাচাইয়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক বৈধতা নিশ্চিত করা। তারা মনে করেন, গণভোট আয়োজনের মাধ্যমে জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও নির্বাচনী সংস্কার প্রক্রিয়া আরও গ্রহণযোগ্য হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন-পূর্ব এই গণভোটের দাবি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, তা পর্যবেক্ষণ করছে বিভিন্ন মহল।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সকাল পর্যন্ত মিছিল ও সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।


