রাজনীতি ডেস্ক
লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাব বিদ্যমান। তিনি দাবি করেন, বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠী এখনো তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরমা কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত উপজেলা গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দলের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অলি আহমদ এ মন্তব্য করেন।
অলি আহমদ বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনো হাসিনার লোকজন সক্রিয় রয়েছেন। কেউ এস আলমের মাধ্যমে, কেউ অন্যভাবে। এখন শুনছি, এস আলমের লোকজন মনোনয়ন পাচ্ছেন। এটি শুধু আমার কথা নয়, জনগণেরও বক্তব্য।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, দেশে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে এবং দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাঁর দাবি, “হাসিনা বাংলাদেশে কিছুই অবশিষ্ট রাখেননি। প্রায় ১৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। এই অর্থ যদি দেশে থাকত, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অন্যতম ধনী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পেত।”
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে অলি আহমদ বলেন, “দেশ পরিচালনা কোনো খেলার বিষয় নয়। লটারি পদ্ধতিতে মন্ত্রী নিয়োগের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব নয়।” তিনি মন্তব্য করেন, “দেশে রক্তপাত চলছে, বিএনপির মনোনয়নকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হচ্ছে। সারা দেশ এখন এক অশান্ত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।”
চন্দনাইশ উপজেলা গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দলের সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি জসিম উদ্দীন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. মোরশেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মফিজুর রহমান।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি শিল্পপতি এম. এ. ইয়াকুব আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিমুল। উদ্বোধক হিসেবে ছিলেন আনিসুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনছুর আলম, চন্দনাইশ উপজেলা এলডিপির সভাপতি মোতাহের মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক আকতার আলম।
অলি আহমদের বক্তব্যে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বিরোধী দলের কর্মকাণ্ডের প্রতিফলন দেখা যায়। তাঁর মন্তব্যে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দলীয় প্রভাব ও প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে মাঠপর্যায়ে অসন্তোষ বাড়ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের মন্তব্য মাঠপর্যায়ের রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে এবং আগামী দিনের রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বৃদ্ধি করতে পারে।


