আন্তর্জাতিক ডেস্ক—
নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানিকে উদ্দেশ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার নির্বাচনের ফলে শহরটি “সামান্য সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে।” বুধবার (৫ নভেম্বর) মিয়ামিতে দেওয়া এক বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, “গতরাতে আমরা নিউইয়র্কে সামান্য কিছু সার্বভৌমত্ব হারিয়েছি।” তবে নিজের বক্তব্যে তিনি রিপাবলিকান দলের সাম্প্রতিক নির্বাচনী পরাজয় নিয়ে তেমন কিছু বলেননি। বরং নিজের নির্বাচনের বার্ষিকী উদ্যাপন করে ট্রাম্প বলেন, “আজ থেকে এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী বিজয় আমরা দেখেছিলাম।”
বক্তৃতার এক পর্যায়ে ট্রাম্প জোহরান মামদানিকে ব্যঙ্গাত্মকভাবে উল্লেখ করলেও পরবর্তীতে কিছুটা নরম স্বর প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আমি চাই আমার জন্মভূমি নিউইয়র্ক সফল হোক। হয়তো আমি মামদানিকে সামান্য একটু সাহায্য করব… হয়তো।” তবে এবার ট্রাম্প নিউইয়র্ক সিটির ফেডারেল তহবিল বন্ধের কোনো হুমকি দেননি, যা অতীতে তিনি বেশ কয়েকবার দিয়েছিলেন।
জোহরান মামদানি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম হিসেবে দেশের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে পরাজিত করেন। ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়ন হারিয়ে কুয়োমো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
৬৭ বছর বয়সী কুয়োমো চার বছর আগে যৌন হয়রানির অভিযোগে গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। নির্বাচনী প্রচারে তিনি মামদানিকে ‘বিপজ্জনক উগ্র বামপন্থি’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং তার প্রস্তাবগুলোকে ‘অবাস্তব ও ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে দাবি করেন।
অন্যদিকে, জোহরান মামদানি নির্বাচনী প্রচারে নিউইয়র্কের সাধারণ নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নের অঙ্গীকার করেন। তার ঘোষিত পরিকল্পনায় করপোরেশন ও ধনীদের ওপর কর বাড়িয়ে প্রাপ্ত আয় দিয়ে জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে ভাড়া স্থগিত রাখা, বিনামূল্যে শিশুসেবা, ও ফ্রি বাস পরিষেবা চালুর মতো প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, মামদানির জয় মার্কিন রাজনীতিতে বৈচিত্র্য ও প্রগতিশীল ধারার নতুন অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এ বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ শহরগুলোতে পরিবর্তনমুখী রাজনীতির শক্তি বৃদ্ধির ইঙ্গিতও দিচ্ছে।
রয়টার্স সূত্রে জানা যায়, নিউইয়র্কের এই নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি, যা শহরটির রাজনৈতিক সক্রিয়তা ও নতুন নেতৃত্বের প্রতি আগ্রহের প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।


