মায়ামি শহরের প্রতীকি চাবি পেলেন লিওনেল মেসি

মায়ামি শহরের প্রতীকি চাবি পেলেন লিওনেল মেসি

খেলাধুলা ডেস্ক

আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসিকে সম্মান জানিয়ে মায়ামি শহরের মেয়র ফ্রান্সিস সুয়ারেজ তার হাতে তুলে দিয়েছেন শহরের প্রতীকি চাবি। বুধবার (৫ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কাসেয়া সেন্টারে আয়োজিত ‘আমেরিকা বিজনেস ফোরাম’-এ এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।

সুয়ারেজ বলেন, “আমাদের শহর, রাষ্ট্র ও বিশ্ব ফুটবলে আপনার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মায়ামির এই প্রতীকি চাবি তুলে দিতে পেরে আমি গর্বিত। আপনি আমাদের শহরকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করেছেন, এজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।”

২০২৩ সালের ১৫ জুলাই ফ্রান্সের ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকার (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন লিওনেল মেসি। তার আগমনেই এমএলএসে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের এই লিগ। বেড়ে যায় জার্সি বিক্রি ও টিকিটের চাহিদা। ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে ইন্টার মায়ামি।

মেসির নেতৃত্বে ইন্টার মায়ামি অভিষেক মৌসুমেই নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লিগস কাপ জিতে নেয়। ২০২৪ সালে ক্লাবটি এমএলএস মৌসুমে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জন করে ‘সাপোর্টারস শিল্ড’ জয়ের রেকর্ড গড়ে। এই সাফল্যে ক্লাবের সহ-মালিক জর্জ মাসও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মেসির প্রতি। তিনি বলেন, “আমি আমাদের অধিনায়ক ও ১০ নম্বর জার্সিধারীর সঙ্গে কিছু বিশেষ বিষয় ভাগ করতে চাই। এই শহরের পক্ষ থেকে এটি একটি ছোট উপহার, যেখানে আমাদের সবার হৃদয় নিবদ্ধ। এটি শুধু মেসির জন্য নয়, তার স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জো ও পরিবারের প্রতিও কৃতজ্ঞতার প্রকাশ।”

৩৮ বছর বয়সেও মাঠে স্বাভাবিক ছন্দে খেলে যাচ্ছেন মেসি। টানা দ্বিতীয় মৌসুমে এমএলএসের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এছাড়া ২০২৫ মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার ‘গোল্ডেন বুট’ জেতেন আর্জেন্টিনার এই অধিনায়ক।

সম্মাননা গ্রহণ করে মেসি বলেন, “ধন্যবাদ, আমি অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। আমরা এখানে আসার পর থেকেই যে ভালোবাসা পেয়েছি, তার জন্য কৃতজ্ঞ। মায়ামি এখন আমাদের পরিবারের এক অংশ হয়ে গেছে, এখানে থাকতে পেরে সত্যিই আনন্দিত।”

সম্প্রতি ইন্টার মায়ামির সঙ্গে আরও তিন বছরের নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন লিওনেল মেসি। অনুষ্ঠানে সেই চুক্তির প্রসঙ্গও আসে। তিনি বলেন, “প্যারিস থেকে যখন এখানে এসেছিলাম, সময়টা ছিল কঠিন। কারণ, পরিবারের বড় একটি সময় কেটেছে বার্সেলোনায়। সেখানে আমরা সবাই সুখে ছিলাম, সন্তানদের বেড়ে ওঠাও সেখানেই। বার্সায় ১৩ বছর বয়সে পা রাখি, স্ত্রীও ২০ বছর বয়সে সেখানে যোগ দেয়। মায়ামিতে শুরুটা কঠিন হলেও দ্রুত মানিয়ে নিয়েছি। এখন এটি আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।”

মেসি আরও বলেন, “ইন্টার মায়ামিতে অধ্যায়টি চালিয়ে যেতে পেরে আনন্দিত। এখানে সবাই সন্তুষ্ট। অবশ্য একসময় এই অধ্যায়ও শেষ হবে, যা ভেবে কিছুটা উদ্বেগ কাজ করে। তবে (পিএসজি ছেড়ে) মায়ামিতে আসার সিদ্ধান্তটি ছিল সম্পূর্ণ পারিবারিক। আমরা এমন একটি জায়গায় থাকতে চেয়েছিলাম, যেখানে জীবনযাপন সহজ ও আনন্দদায়ক। এখানে যেভাবে অভ্যর্থনা পেয়েছি, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। আজকের দিনটি সেই ভালোবাসারই আরেকটি প্রমাণ।”

বর্তমানে লিওনেল মেসি এমএলএসে ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলছেন এবং ক্লাবটির সাফল্যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শহর ও ক্লাবের প্রতি তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘মায়ামি সিটির চাবি’ তুলে দেওয়া হলো ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড়ের হাতে।

খেলাধূলা