বিনোদন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্ক সিটিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিক জোহরান মামদানি। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে তিনি শহরটির ১১২তম মেয়র নির্বাচিত হয়ে নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম ও কনিষ্ঠতম মেয়র হিসেবে নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছেন।
নবনির্বাচিত মেয়রকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এই আন্তর্জাতিক তারকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে জোহরানের প্রতি শুভেচ্ছা জানান। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে জোহরানের বিজয় ভাষণের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন, “অভিনন্দন জোহরান মামদানি, নিউইয়র্ক সিটির ১১২তম মেয়র! ইতিহাস তৈরি হলো। মীরা নায়ার, আপনাকেও অভিনন্দন।”
নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক নির্বাচনে জোহরান মামদানি নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হন। তরুণ প্রজন্ম ও অভিবাসী সম্প্রদায়ের ব্যাপক সমর্থনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী নগর প্রশাসনের নেতৃত্বে আসেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার এই জয় শুধু নিউইয়র্কের রাজনীতিতে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের বহুত্ববাদী সমাজব্যবস্থার প্রতীক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।
জোহরান মামদানি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার এবং উগান্ডা-ভারতীয় শিক্ষাবিদ মাহমুদ মামদানির পুত্র। উগান্ডার কাম্পালায় জন্ম নেওয়া জোহরানের শৈশব কেটেছে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে। পরবর্তীতে তার পরিবার স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস শুরু করে। তিনি দ্য ব্রঙ্কস হাই স্কুল অব সায়েন্স এবং বাউডোইন কলেজ থেকে শিক্ষা সম্পন্ন করেন।
রাজনীতিতে আসার আগে জোহরান সামাজিক ন্যায়বিচার, অভিবাসী অধিকার এবং আবাসন সংকট সমাধানে কাজ করেছেন। নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেন। বিশেষ করে সাশ্রয়ী ভাড়া, গণপরিবহন উন্নয়ন এবং বৈষম্যবিরোধী নীতিতে তার ভূমিকা প্রশংসিত হয়।
জোহরানের এই ঐতিহাসিক বিজয় দক্ষিণ এশীয় ও মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে বহুজাতিক ও বহু-ধর্মীয় সমাজে নেতৃত্বের উচ্চ পর্যায়ে দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত তরুণদের উঠে আসা অভিবাসী প্রতিনিধিত্বের নতুন অধ্যায় সূচিত করছে।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার শুভেচ্ছা বার্তাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিকরা জোহরানের জয়কে “ঐতিহাসিক মুহূর্ত” হিসেবে বর্ণনা করছেন।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জোহরান মামদানি শহর পরিচালনায় স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তি এবং নাগরিক সেবার মানোন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হবে জনকল্যাণ ও ন্যায়ভিত্তিক নগর শাসন প্রতিষ্ঠা করা


