সালমান শাহ-সামিরা প্রসঙ্গ পেরিয়ে নতুন করে আলোচনায় শাবনূর

সালমান শাহ-সামিরা প্রসঙ্গ পেরিয়ে নতুন করে আলোচনায় শাবনূর

বিনোদন ডেস্ক

দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর দীর্ঘ বিরতির পর আবারও বড় পর্দায় ফিরছেন। ১৯৯৩ সালে প্রখ্যাত নির্মাতা এহতেশামের পরিচালনায় ‘চাঁদনী রাতে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক ঘটে তার। এরপর প্রায় তিন দশক ধরে অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকদের ভালোবাসা অর্জন করেন তিনি। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন, তবে সম্প্রতি আবারও চলচ্চিত্রে নিয়মিত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

শাবনূর জানিয়েছেন, তিনি চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় নির্মিতব্য নতুন চলচ্চিত্র ‘মাতাল হাওয়া’-তে অভিনয় করবেন। এতে তার সহশিল্পী হিসেবে থাকছেন অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ। এর আগে তারা প্রয়াত শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘বাংলা’ চলচ্চিত্রে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও দর্শকের সামনে ফিরতে পেরে তিনি আনন্দিত ও আশাবাদী বলে জানান।

চলচ্চিত্রে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে শাবনূর বলেন, “শিল্পীদের আসলে পেছনে ফেরার কিছু নেই। একজন শিল্পী সব সময়ই ভালো গল্পের অপেক্ষায় থাকেন। ভালো গল্প পেলেই আবারও কাজ শুরু করা যায়।” তিনি জানান, কিছুদিন আগে ‘রঙ্গনা’ নামের একটি চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেছিলেন, যা এখনো অসম্পূর্ণ রয়েছে। চলচ্চিত্রটির গল্প তার মন ছুঁয়ে গেছে এবং শিগগিরই এর কাজ শেষ করার পরিকল্পনা আছে বলেও জানান তিনি।

শিল্পীদের বয়স প্রসঙ্গে শাবনূর বলেন, “শিল্পীদের বয়স বলে কিছু নেই। ভালো চরিত্র পেলেই কাজ শুরু করা যায়। আমাদের জীবনের মূল বিষয়ই হলো সৃষ্টিশীলতায় ডুবে থাকা। তাই বয়স যতই বাড়ুক, আমি অভিনয় করে যাব।”

অভিনয়ে ফেরার পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও জানান এই অভিনেত্রী। তিনি বলেন, “চলচ্চিত্র নির্মাণের ইচ্ছাটা অনেক আগে থেকেই ছিল। আগের সময়টা সিনেমা জগতের জন্য অনুকূল ছিল না। এখন মনে হচ্ছে চলচ্চিত্রের ভালো সময় আবার ফিরে আসছে। তাই হয়তো এবার নির্মাণের কাজটিও শুরু করতে পারব।”

এ ছাড়া নিজের ব্যক্তিজীবনের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শাবনূর জানান, তার ছেলে আইজেনকে ঘিরেই এখন তার পৃথিবী। তিনি বলেন, “আইজেন খুব অভিমানী ও মেধাবী। ও আমাকে খুব যত্ন করে। আমার মনে হয়, আমি নয়, ও-ই এখন আমার অভিভাবক।”

অভিনেত্রী হিসেবে দীর্ঘ পথচলায় নানা অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি স্মৃতিচারণ করেন প্রয়াত নায়ক সালমান শাহকে নিয়ে। শাবনূর বলেন, “সালমান শাহর মৃত্যুর সঙ্গে আমাকে কেন জড়ানো হয়েছিল, তা আজও বুঝে উঠতে পারিনি। তিনি আমাকে ছোট বোনের মতোই দেখতেন। তার মা-বাবাও আমাকে মেয়ের মতো ভালোবাসতেন। আমাদের মধ্যে সুন্দর বন্ধুত্ব ছিল, যা কেউ কেউ ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছে।”

সালমান শাহর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “যখন শুনলাম সালমান মারা গেছে, বিশ্বাসই করতে পারিনি। ভেবেছিলাম কেউ মজা করছে। পরে নিশ্চিত হয়ে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলাম এবং এফডিসিতে গিয়ে তাকে শেষবার দেখি।”

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে শাবনূর বলেন, “ছোটবেলায় যেভাবে সবাই খেলাধুলা করে, ঘুরে বেড়ায়, আমি সে সুযোগ পাইনি। ছোটবেলা থেকেই ফিল্মে যুক্ত হয়ে যাই। তাই এখনো সেই শৈশবকে খুব মিস করি।”

তিনি জানান, দেশের বাইরে থাকলেও বাংলাদেশ ও চলচ্চিত্রের সঙ্গে তার আবেগের বন্ধন অটুট। “দর্শকের ভালোবাসাই আমাকে বারবার ফিরিয়ে আনে। তাই এবার স্থির করেছি আবারও চলচ্চিত্রে ডুবে যাব,” বলেন তিনি।

প্রায় এক যুগের বিরতির পর শাবনূরের এই প্রত্যাবর্তনকে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। অনেকের মতে, তার মতো অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় অভিনেত্রীর পুনরাগমন চলমান চলচ্চিত্র অঙ্গনে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে।

বিনোদন