জাতীয় ডেস্ক:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয় টিজার প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে প্রকাশিত এক মিনিট ৯ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের এই টিজারে উঠে এসেছে সীমান্তে নিহত ফেলানী খাতুনের পিতা মো. নূর ইসলামের বক্তব্য।
প্রেস উইং সূত্রে জানা যায়, টিজারটি সরকারের প্রচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ করা হয়। এতে নূর ইসলাম তার কন্যা ফেলানী খাতুনের হত্যাকাণ্ডের স্মৃতিচারণ করেন এবং বিচার না পাওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ভিডিওতে নূর ইসলাম বলেন, তিনি এখনো ন্যায়বিচার পাননি এবং সীমান্তে তার কন্যার মৃত্যুর পর সে সময়ের সরকারের অবস্থানে হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “আজও আমি বিচার পাইনি। কীভাবে বিচার পাব? বরং তখন আমাদের সরকার ভারতের পক্ষেই কথা বলেছিল। তখন বাংলাদেশের সরকার ছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা আর এমন সরকার চাই না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন সরকার চাই না, যারা আমাদের পক্ষে কথা বলতে পারে না। আমরা এমন সরকার চাই, যারা আমাদের পক্ষে দাঁড়াবে এবং হত্যার বিচার চাইতে সাহসী হবে।”
টিজারের শেষাংশে নূর ইসলাম দেশবাসীর প্রতি ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমরা ভোট দেব, আমাদের ক্ষমতা ফিরিয়ে নেব। এই নির্বাচনে কে জিতবে? বাংলাদেশ জিতবে।”
প্রেস উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, টিজারটির সমাপ্তিতে দর্শকদের উদ্দেশে বার্তা দেওয়া হয়েছে—“ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়ে ঠিক করুন কেমন বাংলাদেশ চান। মনে রাখবেন, দেশের চাবি এবার আপনার হাতে।”
নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর আগে, সরকার একই প্রচারণার অংশ হিসেবে প্রথম টিজার প্রকাশ করেছিল, যা ভোটারদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে তৈরি বলে জানানো হয়।
বিশ্লেষক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় টিজারে ফেলানী খাতুনের পিতার বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার ইস্যুকে সামনে এনে ভোটারদের আবেগ ও দায়িত্ববোধে আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে সরকারিভাবে টিজারের বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো অতিরিক্ত মন্তব্য করা হয়নি।
নির্বাচনের আগে এ ধরনের প্রচারমূলক টিজারগুলো নাগরিকদের ভোট দেওয়ার প্রতি উৎসাহিত করবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল আশা করছে। প্রেস উইং জানিয়েছে, পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে আরও কয়েকটি প্রচারণা ভিডিও প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক ইস্যু তুলে ধরা হবে।
প্রসঙ্গত, সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের আনিচারী এলাকার কিশোরী ফেলানী খাতুন নিহত হন। ঘটনাটি সে সময় আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। নূর ইসলামের সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে টিজারটিতে ওই ঘটনার প্রেক্ষাপট আবারও আলোচনায় এসেছে।


