ইসির কঠোর ব্যবস্থা: জাতীয় নির্বাচনের আগে ইলেকট্রনিক ভোটিং ও ইএমএস সিস্টেমে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার

ইসির কঠোর ব্যবস্থা: জাতীয় নির্বাচনের আগে ইলেকট্রনিক ভোটিং ও ইএমএস সিস্টেমে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার

জাতীয় ডেস্ক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সিস্টেম (ইএমএস), ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেম (ইভিএম) এবং সংশ্লিষ্ট অ্যাপসহ অন্যান্য ডিজিটাল অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রযুক্তিনির্ভর অংশে সাইবার নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা বজায় রাখতেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সম্প্রতি ইসির উপসচিব মোহাম্মদ শাহ আলম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এসব নির্দেশনা জারি করা হয়। আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশনের ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেমসহ সকল সফটওয়্যারে ‘ভালনারাবিলিটি অ্যান্ড পেনেট্রেশন টেস্টিং’ (ভিএপিটি) কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে সিস্টেমের সম্ভাব্য দুর্বলতা চিহ্নিত ও সমাধান করে তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোর সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আইসিটি অডিট টিমকে।

অফিস আদেশে আরও বলা হয়েছে, ভিএপিটি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তা ও কর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, জ্ঞান ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের আইসিটি বিভাগকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে সিস্টেম ব্যবহারের পূর্বে মাঠপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত কারিগরি সাপোর্ট নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

এছাড়া ভবিষ্যতে কোনো কর্মরত ব্যক্তি যেন ‘গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেমে লগ-ইন’ পুনরায় ব্যবহার করতে না পারেন, সে বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ আরোপের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ারকে। এ পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো সিস্টেমে অননুমোদিত প্রবেশ বা অপব্যবহারের ঝুঁকি প্রতিরোধ করা।

আদেশে আরও বলা হয়েছে, ভিএপিটি সম্পন্ন হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের প্রশাসনিক কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন আকারে ফলাফল সরাসরি সিনিয়র সচিব বা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে উপস্থাপন করবেন। প্রতিবেদন যাচাইয়ের পর সিস্টেম সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিয়ে চূড়ান্তভাবে কার্যক্রম সম্পাদনের অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচনের সময় ভোটগ্রহণ, ফলাফল ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ইএমএস ও ইভিএম সিস্টেমের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব সিস্টেমে কোনো প্রকার দুর্বলতা বা ত্রুটি থেকে যেন নির্বাচন প্রক্রিয়া বিঘ্নিত না হয়, তা নিশ্চিত করতেই কমিশন আগাম এই নিরাপত্তা অডিট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিএপিটি কার্যক্রম সম্পন্ন হলে নির্বাচন-সংক্রান্ত তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো আরও সুরক্ষিত ও নির্ভরযোগ্য হবে। এতে নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও প্রযুক্তিগত স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগকে নির্বাচনপূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ইলেকট্রনিক ভোটিং ও ফলাফল ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা জোরদারের মাধ্যমে জনগণের আস্থা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাতীয়