জাতীয় ডেস্ক
রাজধানীর রমনায় সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রাল চার্চ লক্ষ্য করে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) রাত পৌনে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় কেউ হতাহত হয়নি বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, রাতের দিকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা গির্জা লক্ষ্য করে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে। এর মধ্যে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয় এবং অন্যটি অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল ঘিরে তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন শেষে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পরপরই রমনা মডেল থানার একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। বিস্ফোরিত ককটেলের অবশিষ্টাংশ সংগ্রহ করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভয়ভীতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হতে পারে। তবে তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।
সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রাল চার্চের পাল পুরোহিত ফাদার আলবার্ট রোজারিও বলেন, ঘটনার সময় গির্জার ভেতরে সীমিতসংখ্যক কর্মী উপস্থিত ছিলেন। ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, তবে কেউ আহত হননি। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে দ্রুত ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছান।
পুলিশ জানায়, হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
রাজধানীর অন্যতম প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ খ্রিস্টান উপাসনালয় হিসেবে পরিচিত এই গির্জাটিতে সাধারণত বড়দিনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে হাজারো ভক্ত সমবেত হন। সম্প্রতি দেশে সংখ্যালঘু ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনা থাকলেও রাজধানীর মধ্যাঞ্চলে এমন ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ঘটনার পেছনে কোনো সংগঠিত নাশকতা নাকি বিচ্ছিন্নভাবে কারও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তৎপরতা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ইতোমধ্যে তদন্ত তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর রমনা এলাকা ও আশপাশে টহল জোরদার করা হয়েছে। গির্জার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


