খেলাধুলা ডেস্ক
দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় পর অবশেষে নিজেদের ঐতিহাসিক ঘর ক্যাম্প ন্যুতে ফিরেছে এফসি বার্সেলোনা। শুক্রবার রাতে ২১ হাজার ৭৯৫ দর্শকের উপস্থিতিতে লামিনে ইয়ামাল, রবার্ট লেওয়ানডস্কি ও সহখেলোয়াড়রা প্রথমবারের মতো অনুশীলনে অংশ নেন। ক্লাবটির জন্য এটি ঘরে ফেরার অভিযাত্রায় এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
২০২৩ সাল থেকে ব্যাপক সংস্কার কাজের কারণে কাতালান ক্লাবটি তাদের ঐতিহ্যবাহী স্টেডিয়ামে কোনো ম্যাচ খেলতে পারেনি। প্রায় ৮৯৫ দিন পর ক্যাম্প ন্যুর মাঠে বার্সেলোনার ফুটবলারদের দেখা গেল। প্রায় ১.৪২ বিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে স্টেডিয়ামটির পুনর্নির্মাণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। এই সময়কালে বার্সেলোনা তাদের হোম ম্যাচগুলো শহরের মন্টজুইক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে খেলেছে।
রোববার লা লিগায় সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে ম্যাচের আগে অনুষ্ঠিত এই অনুশীলন সেশনটিকে একটি পরীক্ষামূলক আয়োজন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ আয়োজনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি যাচাই করছে। স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, দর্শক প্রবেশপথ, এবং মাঠের অবকাঠামোগত মান পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে এই সেশনের মাধ্যমে।
বার্সেলোনার নতুন প্রধান কোচ হান্সি ফ্লিকের জন্য এটি ছিল ক্যাম্প ন্যুতে প্রথম আনুষ্ঠানিক উপস্থিতি। একইভাবে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ধারে আসা ইংলিশ ফরোয়ার্ড মার্কাস র্যাশফোর্ডের জন্যও এটি ছিল স্টেডিয়ামটির প্রথম অভিজ্ঞতা। অনুশীলনের সময় খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস এবং দর্শকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা পুরো পরিবেশকে উৎসবমুখর করে তোলে।
ক্লাব সভাপতি জোয়ান লাপোর্তা জানিয়েছেন, বার্সেলোনা আগামী ২২ নভেম্বর লা লিগায় অ্যাথলেটিক বিলবাওর বিপক্ষে অথবা এক সপ্তাহ পর আলাভেসের বিপক্ষে ম্যাচের মাধ্যমে ক্যাম্প ন্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিরতে পারে। পরের তারিখটি ক্লাবটির ১২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সঙ্গেও মিলে যাচ্ছে, যা ঘরে ফেরাকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলবে। এরপর ২ ডিসেম্বর আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে পূর্ণ উদ্দীপনায় মাঠে নামবে কাতালান ক্লাবটি।
বর্তমানে ক্যাম্প ন্যুর দর্শক ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার ৯৯১ জনে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। তবে ক্লাব কর্তৃপক্ষ আরও দুটি নতুন লাইসেন্সের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এর একটি ৪৫ হাজার দর্শকের প্রবেশাধিকার দেবে, আর অপরটি স্টেডিয়ামের পূর্ণ উদ্বোধনের অনুমতি হিসেবে গণ্য হবে।
যদিও সংস্কার কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি, স্টেডিয়ামের প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। তৃতীয় তলা এবং ছাদ নির্মাণ এখনো চলমান। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। তখন ক্যাম্প ন্যুর আসনসংখ্যা হবে ১ লাখ ৫ হাজার।
ক্লাবের কর্মকর্তারা আশা করছেন, আধুনিক সুবিধা ও উন্নত দর্শক অভিজ্ঞতা নিয়ে নতুন রূপে ক্যাম্প ন্যু শুধু বার্সেলোনার নয়, ইউরোপের ফুটবলের অন্যতম আকর্ষণীয় ভেন্যুতে পরিণত হবে।


