জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

জাতীয় ডেস্ক

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যান্য সদস্যরা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন এবং এ বিষয়ে কোনো সংশয় বা অনিশ্চয়তা নেই।

শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, গণভোট ইস্যুতে যদি রাজনৈতিক দলগুলো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেউ কেউ দাবি করছেন যে জুলাই চার্টার প্রণয়নের সময় কৃষক, নারী ও শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়নি—তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো কি এই জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে না?

তিনি আরও বলেন, জুলাই চার্টারে রাষ্ট্র পরিচালনা ও নির্বাচনী কাঠামো সম্পর্কিত সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে নির্বাচনের পর প্রয়োজন মনে হলে নতুন করে সংলাপের মাধ্যমে কিছু বিষয়ে সংযোজন বা সংশোধন আনা যেতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, বর্তমান সরকার নির্বাচন আয়োজনের সকল প্রশাসনিক ও আইনি প্রস্তুতি গ্রহণ করছে, যাতে ভোট প্রক্রিয়া সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হয়। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে নির্বাচনের পরিবেশ আরও সুসংহত করতে ভূমিকা রাখে।

অন্যদিকে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি শেখ হাসিনা ১৮ কোটি মানুষকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। শফিকুল আলমের ভাষায়, “এর মানে দাঁড়ায় দেশের সব নাগরিককেই সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।” তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা সম্পর্কিত বিষয়ে দেশের সব রাজনৈতিক দলকেই এখন একটি স্পষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে।

সভায় তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষা ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, “নির্বাচনই এখন দেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা ২০০৮ সালের পর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ইভেন্ট হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা, সমঝোতা এবং নীতি নির্ধারণমূলক পদক্ষেপ আরও গতিশীল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শফিকুল আলমের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, সরকার নির্বাচনের সময়সূচি ও কাঠামো নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তায় নেই। এখন রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ ও সিদ্ধান্তই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ নির্ধারণ করবে।

জাতীয়