নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি ;
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসায় ছাত্রীদের ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করেছেন মাদ্রাসার ‘বড় হুজুর’ খ্যাত প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
কয়েকজন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শনিবার তাকে আটকের পর রবিবার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১১ এ তথ্য জানায়।
র্যাব-১১ এর এএসপি আলেপউদ্দিন জানান, অভিযুক্ত মো. মোস্তাফিজুর রহমান বিগত ৩ বছর ধরে দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসার ১১ জন ছাত্রীকে মাদ্রাসায় তার রুমে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানি করে আসছে এবং এই অপকর্মের পর সেসব ছাত্রীদের কেউ কেউ মুখ খোলার চেষ্টা করলে তাদের একেকজনকে একেক অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়। এভাবে সে বিভিন্ন বয়সী মাদ্রাসার ছাত্রীদেরকে বিভিন্ন প্রলোভনসহ নানা কৌশলে ধর্ষণ করত।
আলেপউদ্দিন আরও জানান, মোস্তাফিজুর ছাত্রীদেরকে কখনো আখেরাতের ভয় দেখিয়ে হুজুরের কথা শোনা ফরজ, না শুনলে গোনাহ হবে এবং জাহান্নামে যাবে-এইরকম নানা ফতোয়ার মাধ্যমে, তাবিজ করে পাগল করা বা পরিবারের ক্ষতি করার কথা বলে ছাত্রীদের ধর্ষণ করতো বলে স্বীকার করে। এমনকি তার ৮ বছর বয়সী নিকট আত্মীয় যে তার মাদ্রাসায় পড়ত তাকেও একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে ভিকটিমের মা-বাবা অভিযোগ করে, যা অভিযুক্ত মোস্তাফিজ অকপটে স্বীকার করেছে। এছাড়াও মুস্তাফিজ নিজেই বিভিন্ন জাল হাদিস তৈরি করে হুজুরের সঙ্গে সর্ম্পক করা জায়েজ আছে বলে ছাত্রীদের বলতো। একটি জাল হাদিসের মাধ্যমে অভিভাবক ও সাক্ষী ছাড়া বিয়ে হয় বলে একাধিক ছাত্রীকে কৌশলে ধর্ষণ করার পর আরেকটি জাল হাদিসের মাধ্যমে তালাক হয়ে গেছে ফতোয়া দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে বের করে দিত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৬ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও আরও ৫ ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর।
উল্লেখ্য, শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসায় চার ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ‘বড় হুজুর’ খ্যাত মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করেছে র্যাব-১১। তবে সে সময় তিনি এ অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন।