জাতীয় ডেস্ক
নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বা তাদের সহযোগী ও সমর্থকরা যদি কোনো ধরনের বিক্ষোভ বা অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাহলে আইন তার সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে বলে সতর্ক করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই সতর্কবার্তা প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী গোষ্ঠীসমূহের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, তারা পুনরায় সহিংস আন্দোলনের চেষ্টা করতে পারে।
প্রেস সচিব লেখেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সমর্থকরা এবং গণহত্যাকারী নেত্রী সম্ভবত ভাবছেন— এটি আবারও ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের মতো সময়।” তিনি আরও বলেন, “তারা মনে করছেন, দুপুরবেলা ডজনখানেক মানুষকে হত্যা করে হাজার হাজার সন্ত্রাসীকে ঢাকার কেন্দ্রে পাঠিয়ে রাস্তাগুলো দখল করবে। দুঃখিত, এখন এটি নতুন বাংলাদেশ।”
শফিকুল আলম তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে দেন যে, বর্তমান সরকার ও প্রশাসন দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্টের কোনো প্রচেষ্টা বরদাস্ত করবে না। তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবীদের ধৈর্য পরীক্ষা করবেন না এবং মনে রাখবেন— এটি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়। এটি জুলাই, চিরদিনের জুলাই।”
প্রেস সচিবের এই মন্তব্যটি আসে এমন সময়ে, যখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্প্রতি সতর্ক করেছে যে, নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক দলটির কিছু সক্রিয় নেতা ও সমর্থক রাজধানী ও কয়েকটি জেলায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ইতিমধ্যেই সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে এবং যেকোনো অবৈধ সমাবেশ বা সহিংস কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শফিকুল আলমের এই সতর্কবার্তা সরকারের বর্তমান নীতির ধারাবাহিকতা বহন করে, যেখানে “জুলাই বিপ্লব”-পরবর্তী স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। জুলাইয়ে সংঘটিত গণআন্দোলনের পর থেকে সরকার দেশে শৃঙ্খলা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় রাজনৈতিক সহিংসতায় একাধিক প্রাণহানি ঘটেছিল, যা দেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মোড় হিসেবে বিবেচিত হয়। সেই ঘটনার উল্লেখ করে প্রেস সচিব সতর্ক করেছেন, অতীতের সহিংস রাজনীতি পুনরাবৃত্তি করার যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর যে কোনো তৎপরতা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো রাজধানীসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করেছে।
সরকারি কর্মকর্তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির যে কোনো চেষ্টা শুধু আইনগতভাবে নয়, বরং জনমতের প্রতিক্রিয়াতেও কঠোরভাবে প্রতিহত হবে। তারা বলেন, জনগণ এখন সহিংস রাজনীতির বিরুদ্ধে এবং “নতুন বাংলাদেশের” স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


