আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জলবায়ু পরিবর্তনকে এখন একটি স্বাস্থ্য সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সংস্থাটি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সরাসরি মানুষের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, এবং তাই এখন সময় এসেছে জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে স্বাস্থ্য বিষয়ক আলোচনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করার।
গত ১৩ নভেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে যে, ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস গত সপ্তাহে ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কপ-৩০ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত আলোচনায় স্বাস্থ্যকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।
টেড্রোস বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী যুক্তি হলো মানুষের স্বাস্থ্য। তবে দীর্ঘদিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত আলোচনায় স্বাস্থ্যকে উপেক্ষা করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “মানুষের জন্য তাদের বা তাদের সন্তানদের স্বাস্থ্য রক্ষা করা অনেক সহজে বোঝানো যায়, কিন্তু জীববৈচিত্র্য বা হিমবাহ রক্ষা করার গুরুত্ব বোঝানো ততটা সহজ নয়। যদিও দুটোই গুরুত্বপূর্ণ, তবে মানুষের স্বাস্থ্য সবচেয়ে কাছের বিষয়।”
তিনি জানান, কপ-৩০ সম্মেলনের আওতায় ১৩ নভেম্বর ‘স্বাস্থ্য দিবস’ হিসেবে পালিত হবে এবং ব্রাজিল এই দিনটিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রিক জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা ঘোষণা করবে। এই উদ্যোগটি অন্যান্য দেশগুলোকে তাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রস্তুত করার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকির মোকাবিলা করতে সহায়তা করবে।
ডব্লিউএইচওর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক প্রধান রুডিগার ক্রেখও জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আলোচনার অভাবের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “যদিও এই সম্মেলনগুলোতে অনেক সময় স্বাস্থ্য বিষয়ক আলোচনা হয়েছে, তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করার একটি নির্দিষ্ট স্থান তৈরি হয়নি। এখন সময় এসেছে স্বাস্থ্যকে আনুষ্ঠানিক আলোচনার অংশ করার।”
ক্রেখ আশা করছেন, আগামী বছর কপ-৩১ সম্মেলনে এই আলোচনা বাস্তবে পরিণত হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই আহ্বান জলবায়ু সংকটের প্রভাব থেকে মানুষের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বৈশ্বিক উদ্যোগের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে, যা শুধু পরিবেশগত নয়, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


