আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজা অঞ্চলের ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তার মাঝে, গাজাবাসীকে অন্য কোথাও স্থানান্তর করার বিষয়ে অমত প্রকাশ করেছেন জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহ এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। শনিবার (১৫ নভেম্বর) ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে, দুই নেতা গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে জানা গেছে, বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ গাজা পুনর্গঠন এবং শাসন কাঠামো পুনঃস্থাপন নিয়ে আরব-ইসলামি আটটি দেশের সমন্বিত উদ্যোগের কথা আলোচনা করেছেন। তারা গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী পর্যায়ে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত না করার বিষয়ে অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহ, গাজার যুদ্ধোত্তর মানবিক সংকট এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং পাকিস্তানের অব্যাহত মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন। রাজা আবদুল্লাহ বলেন, পাকিস্তান গাজা সংকটের জন্য মানবিক সহায়তায় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে এবং এর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও জোরালোভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
গাজার এই সংকটপূর্ণ অবস্থায় যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীর ও গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। খান ইউনিস, গাজা সিটি এবং রাফাহ সীমান্তজুড়ে নতুন করে হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, যুদ্ধবিরতির পরেও এক মাসে অন্তত দেড় হাজার ভবন উড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। পশ্চিম তীরে রামাল্লার কাছে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণে কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিখোঁজ হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে।
এই অবস্থায়, গাজাকে ধীরে ধীরে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজার শিক্ষা ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করতে কাজ শুরু করেছে। দুই বছরের ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রায় ৮২ শতাংশ স্কুল ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে, অস্থায়ীভাবে পাঠদান চালু করার জন্য বিভিন্ন সংস্থা খালি জমিতে বা ধ্বংসপ্রাপ্ত স্কুলগুলির উঠানে ক্লাস শুরু করেছে।
তবে, শিক্ষাসামগ্রীর অভাব এবং নিরাপদ পরিবেশের অভাবে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। গাজার শিক্ষার্থীরা যুদ্ধ চলাকালে শারীরিক এবং মানসিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিক্ষকরা জানান, যুদ্ধোত্তর মানসিক চাপ সামলানো এবং শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে গাজার মানুষের প্রতি মানবিক সহায়তার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও, ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরো তীব্র পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি উঠেছে।


