ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য পরিবেশে আয়োজনের জন্য রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চেয়েছেন সিইসি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য পরিবেশে আয়োজনের জন্য রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চেয়েছেন সিইসি

জাতীয় ডেস্ক

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্যভাবে সম্পন্ন করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ও পরামর্শ চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। রোববার (১৬ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

সিইসি এ সময় বলেন, “নির্বাচন কমিশন একা এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে পারে না। বিশেষ করে জাতীয় নেতৃবৃন্দ, যাদের সরাসরি ভোটারদের প্রভাবিত করার ক্ষমতা রয়েছে, তাদের সহযোগিতা অপরিহার্য।” তিনি উল্লেখ করেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কমিশনকে অনেকগুলো বড় ও চ্যালেঞ্জিং কাজে হাত দিতে হয়েছে। কাজের চাপের কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের মূল কাজ ও অর্জন নিয়ে সিইসি বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ একটি বিশাল উদ্যোগ ছিল। এতে প্রায় ৭৭ হাজার কর্মকর্তা মাঠে কাজ করেছেন। তিনি জানান, প্রায় ২১ লাখ মৃত ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং প্রায় ৪০ লাখ ভোটার, যাদের নাম তালিকায় নেই, শনাক্ত করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়া নতুন কিছু উদ্যোগ ও ইনিশিয়েটিভের বিষয়ে সিইসি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত জটিল ও নতুন একটি উদ্যোগ। নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত প্রায় ১০ লাখ মানুষ যাতে নিজেরা ভোট দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। দেশের বাইরে পোস্টেড সরকারি কর্মকর্তা এবং কারাগারে থাকা নাগরিকদের ভোটদানের ব্যবস্থাও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার বিলম্ব প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, “আমরা এত কাজের চাপের মধ্যে পড়ে গেছি, যার কারণে আলোচনা শুরু করতে দেরি হয়েছে। তবে নির্বাচনী সংস্কার কমিশন তাদের কাজ অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে। সংস্কার কমিশন রিপোর্ট দেওয়ার আগে বিভিন্ন পক্ষ, বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ৮০টিরও বেশি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনেও আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকেও সংস্কার কমিশনের কিছু বিষয় স্ব-উদ্যোগে বাস্তবায়নের ঘোষণা ছিল।”

সিইসি নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার গুরুত্বও তুলে ধরেন। তিনি জানান, আচরণ বিধিমালা তৈরি করার পর তা দীর্ঘদিন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ছিল এবং রাজনৈতিক দলগুলোর লিখিত মতামত নিয়ে এতে সমন্বয় করা হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা সুষ্ঠুভাবে মেনে চলা একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার মূল ভিত্তি। তাই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে মনোযোগ দিয়ে আচরণ বিধিমালা পড়ার পাশাপাশি তাদের দলের কর্মীদের কাছে প্রচারের ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

এই সংলাপ ও প্রস্তুতি কার্যক্রম নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সহযোগিতায় আশা করা হচ্ছে যে, আসন্ন নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা বজায় রাখা এবং সুষ্ঠু ভোটাধিকার কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে।

জাতীয়