সালাহউদ্দিন আহমদ: শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁনের মৃত্যুদণ্ডে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ন্যায়বিচার

সালাহউদ্দিন আহমদ: শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁনের মৃত্যুদণ্ডে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ন্যায়বিচার

নিজস্ব প্রতিনিধি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ২৪ জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের মৃত্যুদণ্ডে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই রায় ভবিষ্যতে কোনো সরকার বা ব্যক্তি ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার ও একনায়ক হয়ে উঠতে পারবে না, তার জন্য উদাহরণ হবে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দল আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষার রূপান্তর, একটি কৌশলগত রোডম্যাপ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ এ মন্তব্য করেন। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়কে একটি মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন এবং তা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা বলে উল্লেখ করেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এই রায় মাইলফলক, যা প্রমাণিত করেছে যে, ফ্যাসিবাদ যতই শক্তিশালী হোক, তার একদিন না একদিন বিচার হবে। রায়ের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, যারা ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারী বা একনায়ক হয়ে ওঠার চেষ্টা করবে, তাদের একদিন আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।” তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই রায় শুধু শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের ব্যাপারেই নয়, ভবিষ্যতেও আরও মামলায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।

বিএনপি নেতা বলেন, “বাংলাদেশে গুম, খুন, অপশাসন এবং বৈষম্য তৈরির দায় শেখ হাসিনার সরকারের উপর রয়েছে। তবে, এই বিচার অপরাধের তুলনায় যথেষ্ট না হলেও, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। এটা ভবিষ্যতের জন্য একটি উদাহরণ, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েম করতে না পারে বা একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করতে না পারে।”

তিনি আরও বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত এই ধরনের বিচার প্রক্রিয়া চালু থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণ একনায়ক শাসকদের বিরুদ্ধে আইনের শাসনের মাধ্যমেই প্রতিবাদ জানাতে সক্ষম হবে।”

এছাড়া, সালাহউদ্দিন আহমদ দাবি করেন যে, বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা ও অপরাধের বিচার দীর্ঘদিন ধরে হয়নি, তবে বর্তমান রায়ের মাধ্যমে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। তিনি মন্তব্য করেন যে, “এ রায় শুধু বিচারিক স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য নয়, এটি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্যও একটি মূল্যবান শিক্ষা।”

সালাহউদ্দিন আহমদ, জামায়াত এবং বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে চলমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং অভিযোগ করেন যে, অতীতে তাদের বিরুদ্ধে যে বিচার হয়েছে, তা কখনোই আন্তর্জাতিক মানের ছিল না। এই রায়ের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থা কিছুটা হলেও পরিবর্তন হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও স্বচ্ছ বিচার হতে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এদিকে, এই রায় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। সরকার এবং বিরোধী পক্ষের মধ্যে আদালতের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মতবিরোধ এবং আলোচনাও চলছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে সরকারের প্রতি অবস্থান নিয়ে চাপানউতোর অব্যাহত রয়েছে।

রাজনীতি