আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের আসন্ন ওয়াশিংটন সফরের আগে ট্রাম্প এই ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, তিনি সৌদি আরবকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির বিষয়টি বিবেচনা করছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি বলছি, আমরা এটা করব। আমরা এফ-৩৫ বিক্রি করব।” এর আগে, গত শুক্রবার, ট্রাম্প জানিয়েছিলেন যে সৌদি আরব লকহিড মার্টিনের তৈরি এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, “ওরা অনেক বিমান কিনতে চায়, তারা আমাকে বিষয়টি দেখতে বলেছে। তারা অনেক ‘৩৫’ কিনতে চায়, বরং এর চেয়েও বেশি ধরনের যুদ্ধবিমান কিনতে আগ্রহী।”
এই ঘোষণাটি এমন সময়ে এসেছে, যখন বিভিন্ন মার্কিন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, ট্রাম্প সৌদির কাছে এফ-৩৫ বিক্রির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন। মার্কিন প্রশাসন এর আগে এমন কোনো প্রস্তাবকে গুরুত্ব দেয়নি, তবে বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা আলাদা বলে মনে হচ্ছে।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সফরের সময় ট্রাম্প ও তিনি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেন। ক্রাউন প্রিন্সের সফরটি ২০২৫ সালের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হবে, এবং তা সম্ভবত প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির ভিত্তি স্থাপন করবে।
এছাড়া, এই সফরে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির আশা করা হচ্ছে, যার মধ্যে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সম্পর্কিত একটি চুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে, এবং ট্রাম্পের এই প্রস্তাবও সেই লক্ষ্যেই একটি পদক্ষেপ হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, বিশেষ করে ইরান ও অন্য আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখে। তবে, এফ-৩৫ বিক্রির বিষয়টি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একাধিক বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এটি মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরক্ষা ভারসাম্যে নতুন পালাবদল ঘটাতে পারে।
এদিকে, কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা এই বিক্রির বিরুদ্ধে সতর্কতা প্রকাশ করেছেন, তাঁদের মতে, সৌদি আরবের মানবাধিকার রেকর্ড ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর এই সিদ্ধান্তের দূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন মনে করছে যে, এফ-৩৫ বিক্রি হলে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে, যা জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ।
এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির আলোচনার সাথে সাথে, এই সফরে সৌদি আরবের সঙ্গে অন্যান্য প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্কের আগামী দিনের প্রেক্ষাপটকে আরও শক্তিশালী করবে।


