নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. সাব্বির ফয়েজ মঙ্গলবার নগদ লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর আহমেদ এবং তার স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ৭৪টি ব্যাংক হিসাব স্থায়ীভাবে ফ্রিজ করার আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন এ তথ্য জানান।
আদালতে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. শেখ রাসেল নগদ লিমিটেডের পক্ষ থেকে ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আবেদন করেন। অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তফা সারোয়ার মুরাদ শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নগদ লিমিটেড কর্তৃক নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত ই-মানি ইস্যু করা হয়েছে এবং ট্রাস্ট কাম সেটেলমেন্ট হিসাব থেকে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও কর্মকর্তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়া, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিকট শেয়ারের মূল্য অপেক্ষা অনেক কম মূল্যে হস্তান্তরের মাধ্যমে অর্থ পাচারের সম্ভাবনার বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (২০১৫ সালের সংশোধনীসহ) এর ২ (শ) (৫) ও ২ (শ) (১৪) ধারার আওতায় প্রতারণা এবং দেশি-বিদেশি মুদ্রা পাচার সম্পর্কিত অপরাধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের নামে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলছে।
আদালতে বলা হয়েছে, অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধান এবং ন্যায়বিচারের জন্য নগদ লিমিটেড সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ স্থানান্তর রোধ করা প্রয়োজন। তাই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যাংক হিসাবসমূহ স্থায়ীভাবে ফ্রিজ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই আদেশের ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অননুমোদিত অর্থ স্থানান্তর করতে পারবে না এবং তদন্তকারীরা সমস্ত আর্থিক লেনদেন বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করতে পারবে। আদালতের এ নির্দেশনা দেশের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ ঘটনা নগদ লিমিটেডের পরিচালনায় স্বচ্ছতা এবং আর্থিক অনিয়ম প্রতিরোধে নতুন ধারা স্থাপন করতে পারে। অনুসন্ধান শেষ হলে মামলার প্রকৃত চিত্র এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ তৈরি হবে, যা দেশের আর্থিক খাতের বিশ্বাসযোগ্যতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।


