ডিআর কঙ্গোতে চার্টার্ড বিমানে আগুন, মন্ত্রী ও সফরসঙ্গীরা নিরাপদ

ডিআর কঙ্গোতে চার্টার্ড বিমানে আগুন, মন্ত্রী ও সফরসঙ্গীরা নিরাপদ

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (ডিআর কঙ্গো)-এর লুয়ালাবা জেলার কোলওয়েজি বিমানবন্দরে সোমবার সকালে একটি চার্টার্ড বিমানে আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিমানে ছিলেন দেশটির শিল্প এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী লুই ওয়াতুম কাবাম্বা এবং তার ১৯ জন সফরসঙ্গী। অবতরণের সময় বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে আগুনে ভস্মীভূত হলেও মন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা নিরাপদে উদ্ধার হয়েছেন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অবতরণের সময় বিমানটির চাকা পিছলে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কিছু ব্যক্তি এবং যাত্রীদের ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, চাকা মাটিতে লেগে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বিমানের পেছনের অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিমানের চারপাশ কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়, তবে দ্রুততম সময়ে মন্ত্রী ও ১৯ জন যাত্রীকে নিরাপদে নামানো হয়।

মন্ত্রী লুই ওয়াতুম কাবাম্বার উপদেষ্টা আইজ্যাক নেইম্বো তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে জানিয়েছেন, আগুন লাগার আগে যাত্রীদের সবাইকে বিমান থেকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার ফলে ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ও সরঞ্জাম ধ্বংস হয়ে গেছে।

স্থানীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অবতরণের সময় চাকা পিছলে যাওয়ায় বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। প্রাথমিকভাবে এই কারণকেই আগুন লাগার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনা ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে যাত্রীদের নিরাপদে বের করে আনে।

ডিআর কঙ্গোতে চার্টার্ড বিমানের নিরাপত্তা বিষয়ক বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই সরকারি পর্যায়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বিমান সংস্থার কর্মকর্তারা দুর্ঘটনার কারণ নির্ধারণে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে বিস্তারিত অনুসন্ধান চালাচ্ছেন। বিমানটির অবতরণ ও আগুন লাগার ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, পাইলট ও বিমান কর্মীরা সতর্কতা অবলম্বন করায় যাত্রীদের প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অবতরণের সময় চাকা পিছলে যাওয়ার মতো প্রযুক্তিগত ত্রুটি প্রতিরোধের জন্য বিমান রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা এটাও উল্লেখ করেছেন যে, বিমান দুর্ঘটনা ঘটলেও তাত্ক্ষণিক ও সমন্বিত উদ্ধার অভিযান যাত্রীদের জীবন রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিমান দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহ বিমানবন্দর এবং বিমান সংস্থার নিরাপত্তা মান উন্নত করার বিষয়ে জরুরি পর্যালোচনা শুরু করেছে। এ ঘটনায় মন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের জীবনের ঝুঁকি এড়াতে দ্রুততর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা ও তৎপরতা প্রদর্শন করছে।

ডিআর কঙ্গোতে বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাসে নিরাপদ উদ্ধার অভিযান সাধারণত কম ঘটে। এই ঘটনায় যে মন্ত্রী এবং যাত্রীরা নিরাপদে বেঁচে গেছেন, তা স্থানীয় বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং জরুরি প্রতিক্রিয়ার গুরুত্বকে পুনর্ব্যক্ত করছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকারি পর্যায়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা প্রটোকল জোরদার করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক