রংপুরে ৫৩ জনের ‘জুলাইযোদ্ধা’ গেজেট বাতিল

রংপুরে ৫৩ জনের ‘জুলাইযোদ্ধা’ গেজেট বাতিল

অনলাইন ডেস্ক

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় রংপুর বিভাগে ৫৩ জনের ‘জুলাইযোদ্ধা’ গেজেট বাতিল করেছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (গেজেট) হরিদাস ঠাকুর স্বাক্ষর করেছেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫ (অধ্যাদেশ নম্বর ৩০, ২০২৫)-এর ১১ (৪) ধারা এবং Rules of Business 1996 Gi Schedule-1 (Allocation of Business)-এর ক্রমিক নম্বর ২৩-এর অধীনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

মন্ত্রণালয়ের একজন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম কয়েকদিন আগে জানান, পূর্ববর্তী তালিকাগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে অভিযোগ এসেছে এবং পত্রপত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছে যে, পূর্বের তালিকাভুক্তদের মধ্যে কেউ কেউ জুলাই আন্দোলনে আহত হননি বা আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন না। এ ধরনের অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ের পরই সরকারের এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এটি কোনো নতুন প্রক্রিয়া নয়; এর আগে গত ৩ আগস্ট মন্ত্রণালয় শহীদদের তালিকা থেকে আটজনের নাম বাতিল করেছে। তবে এবারই প্রথমবার ‘জুলাইযোদ্ধা’ গেজেট বাতিলের মতো পদক্ষেপ নেয়া হলো। সরকারি হিসেবে, বর্তমানে শহীদ সংখ্যা ৮৩৬ জন। জুলাই আন্দোলনের আহত বা জুলাই যোদ্ধাদের সংখ্যা ‘অতি গুরুতর আহত’ (ক), ‘গুরুতর আহত’ (খ) এবং ‘আহত’ (গ) এই তিন শ্রেণিতে মোট ১৩ হাজার ৮০০ জন।

বাতিল হওয়া গেজেটের মধ্য দিয়ে মন্ত্রণালয় এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যে শুধুমাত্র যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সত্যিকারভাবে আহত বা যোগ্য ব্যক্তিরাই জুলাইযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। সরকারের এই পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে যাতে জুলাই আন্দোলনের ইতিহাসের সঠিকতা এবং সত্যিকার অংশগ্রহণকারীদের স্বীকৃতি নিশ্চিত করা যায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারি তালিকায় সংশোধন ও যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে ভুল বা অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্তদের সনাক্ত করা সহজ হবে। এটি শহীদ ও আহতদের যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করা এবং সরকারি অনুদান ও সুবিধা সঠিকভাবে বিতরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে এটি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নীতিমালার স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।

মন্ত্রণালয়ের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য হলো যথাযথভাবে জুলাই আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণ করা এবং শুধুমাত্র প্রকৃত আহত ও শহীদদের উপকার নিশ্চিত করা। আগামিতে এ ধরনের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

জাতীয়